শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাম অয়েলে রপ্তানি শুল্ক কমাচ্ছে মালয়েশিয়া, কমবে দাম

মঙ্গলবার, মে ১০, ২০২২
পাম অয়েলে রপ্তানি শুল্ক কমাচ্ছে মালয়েশিয়া, কমবে দাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ক্রেতা দেশগুলোর অনুরোধে পাম অয়েলের রপ্তানি শুল্ক প্রায় অর্ধেক কমাতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। আগামী জুন মাসের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে। সেটি হলে মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানির পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনি দামও কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার অনুপস্থিতিতে বিশ্বে ভোজ্যতেলের বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করার চেষ্টা করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম উৎপাদক মালয়েশিয়া। এ লক্ষ্যে পাম অয়েলের রপ্তানি শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে দেশটি।

মালয়েশিয়ার বৃক্ষরোপণ শিল্প ও ভোগ্যপণ্য মন্ত্রী জুরাইদা কামরুদ্দিন এক সাক্ষাৎকারে রয়টার্র্সকে বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় থেকে মালয়েশীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এই রপ্তানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তিনি জানান, মালয়েশিয়ায় পাম অয়েল রপ্তানিতে বর্তমানে আট শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। সেটি কমিয়ে চার থেকে ছয় শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী জুন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন জুরাইদা।

খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সূর্যমুখী তেল সরবরাহে বিঘ্ন ও পাম অয়েল রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার সুযোগ নিয়ে বিশ্ববাজারে নিজেদের অংশ বাড়াতে চায় মালয়েশিয়া।

জুরাইদা বলেন, এ সংকটের সময় আমরা বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করতে পারি, যেন আরও বেশি পাম অয়েল রপ্তানি করা যায়। প্রস্তাবে মালয়েশিয়ার বৃহত্তম পাম অয়েল উৎপাদক এফজিভি হোল্ডিংসসহ বিদেশি ওলিওকেমিক্যাল উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর জন্য শুল্কছাড়ের বিষয়টি আরও সুবিধাজনক করার কথা বলা হয়েছে বলে জানান মালয়েশীয় এ মন্ত্রী।

এছাড়া, বৈশ্বিক ও স্থানীয় খাদ্য শিল্পে পাম অয়েলের সরবরাহ বাড়াতে মালয়েশিয়া বি৩০ বায়োডিজেল নীতি বাস্তবায়নেও কিছুটা শিথিলতা দেখাতে পারে। এ নীতি অনুসারে, দেশটিতে বায়োডিজেলে ৩০ শতাংশ পাম অয়েল মেশানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জুরাইদার কথায়, আমাদের প্রথমে বিশ্বের খাদ্য সংস্থানে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্টের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসেই পাম অয়েল ব্যবহৃত হয়। বৈশ্বিক ভোজ্যতেলের বাজারের ৬০ শতাংশই পাম অয়েলের দখলে। এর সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী ইন্দোনেশিয়া। স্থানীয় বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বলে গত ২৮ এপ্রিল থেকে পাম অয়েল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইন্দোনেশীয় সরকার। এর পরপরই বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম অনেকটা বেড়ে যায়। সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের মতো দেশগুলো, যারা ইন্দোনেশীয় পাম অয়েলের ওপর বেশি নির্ভরশীল।

তবে আশার কথা, ইন্দোনেশিয়ার এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হতে পারে শিগগির। তাছাড়া এরই মধ্যে বিশ্ববাজারেও কমতে শুরু করেছে পাম অয়েলের দাম।

জুরাইদা জানান, আমদানিকারক দেশগুলো মালয়েশিয়াকে পাম অয়েলের রপ্তানি শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানিয়েছিল। সরবরাহ ব্যবস্থায় বাড়তি খরচের কারণে এটি খুব বেশি বলে মনে করছে তারা।

মালয়েশীয় এ মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ, ভারত ও ইরান মালয়েশিয়ার কাছ থেকে পাম অয়েলের বিপরীতে চাল, গম, ফল ও আলুর মতো কৃষিপণ্য বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছে।

বাংলাদেশ চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ পাম অয়েল ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে, বাকি ২০ শতাংশ কেনে মালয়েশিয়া থেকে। তবে বিশ্বের বৃহত্তম উদ্ভিজ্জ তেল আমদানিকারক ভারত সবচেয়ে বেশি পাম অয়েল নেয় মালয়েশিয়া থেকে।

মালয়েশিয়ার পাম শিল্পে বিপুল সংখ্যক বিদেশি কর্মী কাজ করেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে দীর্ঘদিন বিদেশিদের প্রবেশ বন্ধ থাকায় মারাত্মক চাপের মুখে পড়েছে দেশটির পাম উৎপাদন। তবে আশার কথা হলো, সেসব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই আবার দেশটিতে ফিরতে শুরু করবেন বিদেশি কর্মীরা। এর ফলে মালয়েশিয়ার পাম উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করছেন জুরাইদা কামরুদ্দিন।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল