বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঢাকাকে কেন্দ্র করে কর্মসূচির পরিকল্পনা বিএনপির

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ১৯, ২০২৩
ঢাকাকে কেন্দ্র করে কর্মসূচির পরিকল্পনা বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার চাপ থাকলেও আপাতত সে পথে হাঁটছে না বিএনপি। বরং আন্দোলনের গতি বাড়াতে রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে অহিংস কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দলটি।

দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি এখন আন্দোলনের মাঠে কার্যকারিতা হারিয়েছে। সরকার পতন আন্দোলনেও ব্যতিক্রমী শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিতে হবে। দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, গত বছরের শেষ দিকে ১০ সাংগঠনিক বিভাগীয় গণসমাবেশের পর এখন পর্যন্ত বিএনপির পালন করা কর্মসূচি প্রশংসা পেয়েছে। সরকার নানাভাবে উসকানি দেওয়ার পরও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে যাননি তাঁরা। বিদেশি শক্তিগুলোও তাঁদের প্রশংসা করেছে। তাই রাজনীতির মাঠে এই সুনাম ধরে রেখে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বিএনপি।

অহিংস শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি কী হতে পারে—তা নিয়ে স্থায়ী কমিটির গত কয়েকটি বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এতে প্রায় সব নেতাই অভিন্ন মত দেন। তাঁদের বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি সারা দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সরকার পতন আন্দোলনও নিয়মতান্ত্রিক হতে হবে। বিএনপির গত কয়েকটি কর্মসূচিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ স্থায়ী কমিটির নেতারাও অহিংস কর্মসূচিতে সরকারের পতন ঘটাবেন বলে হুঁশিয়ার করেছেন।গত মঙ্গলবারও স্থায়ী কমিটির সভায় বিএনপির ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, ধারাবাহিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে দলটি। তবে পরিস্থিতি বুঝে হঠাৎ ঢাকামুখী বড় ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ঢাকামুখী লং মার্চ ও রোড মার্চ, ঢাকায় গণ-অবস্থান, ঢাকা ঘেরাও, সচিবালয় ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও—এ ধরনের কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি আলোচনা করছে। যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো থেকেও একই ধরনের প্রস্তাব পেয়েছে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।

এর আগে ঢাকা থেকে অন্যান্য বিভাগমুখী লং মার্চ, রোড মার্চ করেছে; কিন্তু এবার এসব কর্মসূচি ঢাকামুখী করার প্রস্তাব এসেছে। নীতিনির্ধারকদের বিশ্লেষণ—সরকার ঢাকামুখী যেকোনো কর্মসূচিতে ভীত হয়ে ওঠে। ফলে আন্দোলনে যে গতি তৈরি হয় তাতে নেতাকর্মী ও জনগণের অংশগ্রহণ অনেক বেড়ে যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে জানান, দলের বিভিন্ন ফোরাম এবং লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আলোচনায় এ ধরনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, এ ধরনের কর্মসূচি এখন হরতাল-অবরোধের চেয়ে বেশি কার্যকর। এসব কর্মসূচিতে জনসম্পৃক্ততা বেশি থাকে। ঢাকামুখী কোনো কর্মসূচি ঘোষণা হলে সরকারের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়। সরকারই হরতালের মতো আবহ তৈরি করে। তবে ঠিক কবে এ কর্মসূচি দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। বিএনপি একটি মোক্ষম সময়ের অপেক্ষায় আছে। অবশ্য দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মার্চের মধ্যে একটি বড় আন্দোলনের দানা বাঁধাতে চান। পরিস্থিতি তৈরি হলে মাসখানেকের মধ্যে এই ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে। মার্চে সম্ভব না হলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে গিয়ে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে দলটিকে।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় নেতারা বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে উসকানি দিয়ে বিএনপিকে সহিংসতার দিকে নিতে চাচ্ছে; কিন্তু বিএনপি সেই ধরনের কর্মসূচি দেবে না। বরং এমন কর্মসূচি দেবে, যাতে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ে। ওই ধরনের কর্মসূচিতে গণজোয়ার তৈরি হয়, যা ১০ বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রমাণিত হয়েছে।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ার প্রতিবাদে বিএনপি বিক্ষোভ করেছে। গ্যাসের দাম বাড়ার প্রতিবাদও জানাবেন তাঁরা। এই ইস্যুতেও কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার যতই উসকানি দিক আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আমাদের ধারাবাহিক কর্মসূচি চলতে থাকবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যতিক্রমী নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি আসবে যাতে জনগণের অংশগ্রহণে জোয়ার তৈরি হবে। এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটানো হবে।’

মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে আলোচনা হয়। নেতারা মনে করেন, কূটনীতিক বিষয়ে অনেক নেতাকর্মীর ধারণা না থাকায় মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক না হওয়ায় অনেকে হতাশ হয়েছেন। বিএনপি নেতারা মনে করেন, বাংলাদেশের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তন হয়নি।

বৈঠকের এক পর্যায়ে অতীতের কর্মসূচির সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের আগে ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও বিষয়টিও উঠে আসে। নেতারা মনে করেন, ৭ ডিসেম্বরের সংঘর্ষের ঘটনায়ও বিএনপির জন্য ক্ষতি হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। যেভাবে ওই ঘটনাটি সমাধান করা উচিত ছিল সেভাবে করা যায়।



/আইপি


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল