রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

শেষরক্ষা হয়নি বাংলাদেশের: ফাইনালে কুয়েত

শনিবার, জুলাই ১, ২০২৩
শেষরক্ষা হয়নি বাংলাদেশের: ফাইনালে কুয়েত

স্পোর্টস ডেস্ক:

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কুয়েতের মতো শক্তিশালী দলকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর বীরত্বের কথাই মনে রাখবেন অনেকে। তার অবিশ্বাস্য কয়েকটি সেভ বাংলাদেশকে বারবার ফিরিয়ে দিয়েছিল প্রাণ। তবে শেষরক্ষা হয়নি।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিটের বাঁশি বাজার আগেই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের গোলক্ষককে পরাস্ত করে কুয়েত। আবদুল্লাহ আল বুলুশির গোলে এগিয়ে যায় সাফের অতিথি দলটি। বাকি সময় ওই গোল ধরে রেখে ১-০ ব্যবধানে সেমিফাইনাল জিতে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙ্গে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেছে কুয়েত।

গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের গোলে সমতায় ফিরে কুয়েত নিজেদের শক্তিমত্তা প্রমাণ করেছিল। বাংলাদেশও জানতো কুয়েতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে তাদের অন্যরকমভাবে জ্বলে উঠতে হবে। সবার প্রতিজ্ঞা ছিল- ম্যাচের আগে হারবো না, জানবাজি রেখে খেলবো। জামাল-জিকোরা খেলেছেনও তাই।

অতিরিক্ত সময়ের গোল বাংলাদেশ সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে। এই বিদায়ে কষ্ট আছে। তবে গ্লানি নেই। বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ কুয়েতের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই করে হেরেছে। আর ১৫ মিনিট ম্যাচটাকে ধরে রাখতে পারলে নিয়ে যেতে পারতো টাইব্রেকারে। তখন যে কোনো কিছুই ঘটতে পারতো।

কুয়েত ম্যাচ জিতেছে ১৫ মিনিট বাকি থাকতে গোল দিয়ে। আর বাংলাদেশ গোল দিতে পারতো ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই। মোরসালিন সহজ সুযোগ মিস না করলে তরুণ এ্ই ফুটবলার ম্যাচ শেষে হয়তো চড়তেন সবার কাঁধে।

কিন্তু ফুটবলে এমন কিছু হয়, যা একদলকে এনে দেয় আফসোস, আরেক দলকে স্বস্তি। না হলে আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত গোল করা মোরসালিন কেন গোলরক্ষককে একাও পেয়েও ওভাবে গায়ে বলটি মারবেন।

লেবানন ও কুয়েতের অন্তর্ভুক্তির পর এবারের সাফ অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের সামনে। যে কারণে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা প্রথমত সেমিফাইনালকেই লক্ষ্যবস্তু করেছিলেন।

তবে বাংলাদেশ গ্রুপপর্বে যে ফুটবল খেলেছে, তাতে অনেকে স্বপ্ন বুনেছিলেন হয়তো দল ফাইনালে খেলবে। জামাল ভূঁইয়রাও ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত পারেনি ১৮ বছর পরে আবার ফাইনালমঞ্চে পা রাখতে।

তবে জামাল ভূঁইয়ারা এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তাতে ফুটবল নিয়ে হতাশা কিছুটা হলেও কাটবে ফুটবলামোদীদের।

ম্যাচটা কেমন ছিল? ৭১ ভাগ পজিশন রেখে বাংলাদেশের গোলমুখে ১৮টি শট নিয়েছে কুয়েত। যার মধ্যে অন টার্গেট শট ছিল ১১টি। বোঝাই যায় বাংলাদেশের রক্ষণের ওপর দিয়ে কী সুনামিটা গেছে!

আর এর ধকল বেশি গেছে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর ওপর দিয়েই। কুয়েতের বৃষ্টির মতো আক্রমণ ঠেকিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা দাঁতে দাঁত চেয়ে কুয়েতি আক্রমণ ঠেকিয়েছেন। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর বীরত্বেই ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়েছিল।

ষষ্ঠ মিনিটে বাংলাদেশ গোলমুখে তৈরি হওয়া জটলায় বিপদের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। গোললাইন থেকে এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।

প্রথমার্ধে বাংলাদেশের নিজেদের কৌশলে খেলে ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে কুয়েতকে। যদিও বল দখলে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। এমনকি পোস্টে শট নেওয়ার ক্ষেত্রেও তারা এগিয়েছিল বাংলাদেশের চেয়ে।

২৯ মিনিটে একটি থ্রো থেকে বক্সের মাথায় বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শট করেছিলেন আল রাশিদি। আনিসুর রহমান জিকো লাফিয়ে এক হাতে বলটি ঠেকিয়ে বাঁচিয়ে দেন দলকে। এর পরপরই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বাঁ-দিক থেকে রাকিবের উদ্দেশ্যে মাপা ক্রস ফেলেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। রাকিব বলের পজিশনে থাকলে মাথা লাগাতে পারেননি।

৫৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রাকিবের নেওয়া শট বাইরে চলে যায় ক্রসবারে বাতাস দিয়ে। ৬১ মিনিটে আবারও রাকিবের সামনে সুযোগ এসেছিল। ডান দিক দিয়ে ঢুকে তিনি যে শট নিয়েছিলেন তা ক্রসবাের ছুঁয়ে চলে যায় বাইরে।

৬৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রিকিকে প্রায় গোল করে ফেলেছিল কুয়েত। কিন্তু আনিসুর রহমান জিকো দুর্দান্ত দক্ষতায় ফিস্ট করে দলকে আরেকবার বাঁচান। ৭০ মিনিটে দলকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে রক্ষা করেন জিকো। মোহাম্মদ আবদুল্লাহ একা পেয়েছিলেন জিকোকে। কিন্তু আবদুল্লাহর নেওয়া শট আটকে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক।

শেষ দিকে কুয়েতের ফরোয়ার্ডদের বারবার হতাশ করেন আনিসুর রহমান জিকো। ঘরোয়া ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসে খেলা জিকো বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিটের শেষ দিকে বাংলাদেশ যখন গোল হজম করে, তখনো হাতে ছিল ১৫ মিনিট। ম্যাচটা সমতায় এনে টাইব্রেকার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা ছিল খেলোয়াড়দের।

কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাও দুটি পরিবর্তন আনেন ওই সময়। বাংলাদেশের সামনে শেষ দিকে সুযোগও এসেছিল কুয়েতের অতি রক্ষণাত্মক কৌশলের কারণে।

কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারেননি রাকিব, সুমন রেজা ও ফাহিমরা। তাইতো ১৪ বছর পর সেমিফাইনালে উঠে সেখান থেকেই হতাশা নিয়ে বিদায় নিতে হয় লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল