সময় জার্নাল ডেস্ক:

বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। মন খারাপ করে তাকিয়ে আছে আইইউবিএটিতে থেকে আসা জাহাঙ্গীর। তার লেখাপড়া একেবারে শেষের দিকে। সে এখন ইন্টার্ন করছে। রিপন স্যার তার আলোচনায় বললেন পড়াশুনা শেষ করে ২/৩ বছর চলে যায় ক্যারিয়ার নির্বাচনে। এই ধরনের একটা কর্মশালায় আরো আগে আসতে পারলে এই বছরগুলো নষ্ট করতে হতো না।

ভিন্ন দৃশ্য দেখা গেলো অন্যপাশে কয়েকজন গোল হয়ে দাড়িয়ে ফিস ফিস করছে। কাছে গিয়ে শুনতে পারলাম বলছে আর একদিনও সময় নষ্ট না। লোখাপড়া এখনো সেমিস্টার বাকি। আজই একটা গ্রুপ খুলতে হবে। গ্রুপের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। কথা বলে জানতে পারলাম এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন ইউনিভার্সটির শিক্ষার্থী। কিন্তু সবাই উদয়ন কলেজে পড়েছে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর)  “আসক্তির ভয়াবহতা ও ক্যারিয়ারে বিভ্রান্তি: সমাধান যে পথে” শীর্ষক দিনব্যাপী এক কর্মশালাযর মিলনায়তনের বাইরের দৃশ্য এটি।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী  "দি বাংলাদেশ এন্টি ড্রাগ ফেডারেশন" কর্তৃক আয়োজিত কর্মশালায় মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলো সংবাদমাধ্যম সময় জার্নাল।

কর্মশালায় সারাদেশ থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর কর্মশালাটি চারটি সেশনে পরিচালিত হয়।

সেগুলো হচ্ছে:

·         মাদকে কেন আসক্ত হয় এবং পরিত্রাণের উপায়,

·         ডোপ টেস্ট কি, কেন জরুরী

·         ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং এবং ক্যারিয়ার গাইড লাইন এবং

·         ইন্টারনেট আসক্তি এবং রক্ষার উপায়

'কোন বয়সে বিভ্রান্তি: কোন বয়সে লক্ষ নির্ধারণ করতে হবে' বিষয়ের উপর বক্তব্যে রিডিং ক্লাব ট্রাস্টের সভাপতি আরিফ খান বলেন, পৃথিবীর সকল মানুষ অনন্য।  ফলে প্রত্যেককে নিজের উপযুক্ত বিষয় বাছাই করতে হবে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক কাজল রশীদ শাহীন বলেন,  আমাদের মাঝে মৌলিক প্রশ্ন উৎপাদন করার মানসিকতা থাকতে হবে। এই প্রশ্ন থেকেই আমাদের মাঝে চিন্তার জন্ম হবে। মানুষের কাজ হলো এই চিন্তাকে ইতিবাচক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমাদের প্রিয় ইমরান মাহফুজ ভাই তার সুন্দর বাচন ভঙ্গিতে বিমোহিত করলেন সকলকে।

কর্মশালায় একদলকে পাওয়া গেলো তারা সদ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে। চোখে রঙিন চশমা। কুইজের সময় একজন আর একজনের হাত টেনে ধরছে, উত্তরের জন্য হাত তুলতে দেবেনা।

অনুষ্ঠানের আয়োজকদের মধ্যে ছুটাছুটির কোন শেষ নেই। লাবিন চিন্তিত কুইজে কি প্রশ্ন করা যায়, তা নিয়ে। মুনিরা দৌড়াচ্ছে তার লাইভ করা নিয়ে। ঠিক সময়ে তার মোবাইল কাজ করছেনা। আর রায়হান তো চিন্তায় অস্থির খাবার সবাই পাবে তো।

এদিকে সব কাজের কাজি আমাদের মাইদুল। মাঝে মাঝে মনে এই বুঝি মাইদুল দৌগাতে গিয়ে আছাড় খাবে। আর আমাদের সবার প্রিয় রলি ভাই মুখ শুকনা করে ঘুরছেন। এই ভেবে এদের দিয়ে আমি কিভাবে অনুষ্ঠান শেষ করব।

আর আমাদের ভলেন্টিয়ার কথা তো না বললেনই না। তারা আগের রাত থেকে খেয়ে না থেয়ে শুধু্ দৌড়াচ্ছে। অংশগ্রহণকারীদের যেকোন সমস্যার আশ্রয়স্থল হচ্ছে ভলেন্টিয়ার আপু ও ভাইয়ারা।

অনুষ্ঠানে সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।অনুষ্ঠানে প্রতিটি সেশনের গান, কবিতা আবৃত্তি এবং কুইজের আয়োজন করা হয়। বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।

সার্টিফিকেট বিতরণের মাধ্যমে দিনব্যাপী আয়োজনের সমাপ্তি হয়।

সময় জার্নাল/এলআর