সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

তফসিল প্রত্যাখ্যান বিএনপির

বুধবার, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
তফসিল প্রত্যাখ্যান বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে দলটি।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের এই অবস্থানের কথা জানেন।

রিজভী বলেন, ‘গোটা বাংলাদেশের প্রত্যাশা, জনমত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর্যুপরি আহ্বান উপেক্ষা করে নিশিরাতের সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের তামাশার তফসিল ঘোষণা করেছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে অতীতের মতোই আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার হরণের জন্য মেরুদণ্ডহীন ও পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন যে তফসিল ঘোষণা করেছে, তা আমরা চরম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। দেশে একটি ভীতিকর যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে একতরফা নির্বাচনের এই তথাকথিত তফসিল-রঙ্গ জনগণ মানে না। এই নীলনকশার নির্বাচনের তফসিলে বাংলাদেশের মাটিতে কোনো নির্বাচন হবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে আমি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে আবারও হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই অবিমৃশ্যকারিতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে যে ভয়াবহ অচলাবস্থা ও চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হবে- তার পুরো দায়ভার তাদেরকেই বহন করতে হবে। এই সঙ্কটের কারণে আওয়ামী মাফিয়া চক্রকে চিরকাল দায়ী থাকতে হবে। জনগণের চলমান অগ্নিগর্ভ আন্দোলন আরও তীব্র, আরও কঠিন থেকে কঠিনতর হবে এবং অতি দ্রুতই আওয়ামী সরকারের পতন ঘটবে ইনশাআল্লাহ। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার পর এই সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার করবে জনগণ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করবেন। একথাতো ডাহা মিথ্যা, ভণ্ডামিপূর্ণ এবং মেকি। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বিশ্বাস করা চোরাবালিতে পড়ার শামিল।’

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন,‘পরপর তিনটি ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রেখে আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশকে নরকপূরীতে ও জনগণের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের দুঃশাসনে পিষ্ট মানুষ তাদের ভোট ও ভাতের অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ফিরে পেতে মরণপন লড়াইয়ে রাজপথে নেমেছে। জনগণ ১৫ বছরের অত্যাচারের জবাব দিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই স্বৈরাচারী সরকার পতনের অতল গহ্বরের মুখে দাড়িয়ে দেশকে নিশ্চিত সংঘাতের দিকে ধাবিত করে পুনরায় গরু-ছাগল দিয়ে নির্বাচনের পায়তারা করছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের সব রাজনৈতিক দল একতরফা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে।’

কার জন্য এই নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে- এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘মানুষ রাজপথে নেমেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে। এটা ১৮ কোটি মানুষের প্রাণের দাবি। এই দাবিকে বন্দুকের নলের মুখে উড়িয়ে দিয়ে একতরফা পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। আর এই নির্বাচন কমিশন সব জেনে-শুনেই দেশকে এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে ঠেলে দিতে তফসিল ঘোষণা করলো। কারণ বর্তমান কমিশন নিশিরাতের ভোটের সরকারের মনোনীত সিলেকশন কমিশন। তারা আওয়ামী লীগের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জনগণের কেউ নন। এই কমিশনকে কেউ মানে না। নির্বাচন কমিশন মূলত আওয়ামী কমিশন।’

বিএনপি এই নেতা বলেন, ‘আজ শেরেবাংলা নগরে আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার সন্ত্রাসী বাহিনীর পাহারা এবং রায়টকার, জলকামান, সজোয়াযান নিয়ে শত শত পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি বেষ্টিত ইসি ভবনে বসে সিইসি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সিলেকশন ভোটের তফসিল ঘোষণা করে গোটা দেশকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করলেন। অতীতে রাকিব- হুদা কমিশনের মতোই কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন গণশত্রুতে পরিণত হলো। তারা শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি অগ্রহণযোগ্য, একপেশে, প্রশ্নবিদ্ধ, বিরোধপূর্ণ নির্বাচনের চরম ধৃষ্টতা দেখানোর যে ঝুঁকি নিলো- জনগণ এর পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেখ হাসিনা ভেবেছেন একটি পাতানো ভোটরঙ্গ মঞ্চস্থ করবেন। কিন্তু তার জেনে রাখা উচিত এটা ২০১৪ কিংবা ২০১৮ নয়। তফসিল দিলেন আর পুলিশি ভোটের মাধ্যমে ফল ঘোষণা করে ক্ষমতার সিংহাসন রক্ষা করলেন, এত সহজ নয়। নির্বাচনের একটা ঘোষণা দিলেন, আর নির্বাচন হয়ে গেলো! এই দিবাস্বপ্ন আর বাস্তবায়িত হবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে নির্বাচন। এসব তফসিল-টপসিল বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেবে জনতা। রাজপথের দিকে তাকিয়ে দেখেন, গোটা দেশ অচল হয়ে গেছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘অবরোধে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ঢাকা। আপনার সব পোশাকি, অপোশাকি রক্ষীবাহিনী, লেঠেল বাহিনী নামিয়েও কিছুই করতে পারছেন না। কীভাবে পারবেন? বাংলাদেশের জনগণ একদিকে, আপনি আর আপনার লাঠিয়াল বাহিনী একদিকে।’

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল