সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি

সোমবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি

মো. জাহিদুল হক, চবি প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আইন ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে এবং প্রয়োজন না থাকা সত্বেও বাংলা ও আইন বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ এবং দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে চলমান ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে চবি শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন শিক্ষকবৃন্দ ।

এসময়ে অবস্থান কর্মসূচীতে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিক বলেন, আজ আমরা বাধ্য হয়ে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। গতকাল আমরা বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করার যৌক্তিক দাবি নিয়ে উপাচার্যের নিকট গিয়েছিলাম। সেখানে অনেকক্ষণ অবস্থান করার পরও তিনি আমাদের কোন কথা শুনতে রাজি হননি। পরে অগোচরে তার বাংলোতে বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড সম্পূর্ণ করেছেন। যা নজিরবিহীন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পরিপন্থী। আমরা মনে করি একারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বলেন, কিছু দিন আগে আমরা লিখিত ভাবে উপাচার্যের নিকট ২৯ টি দাবি জানিয়ে ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন, শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার স্বার্থে এ দাবি করা হয় । এখানে ছাত্র শিক্ষকের সমস্যাসহ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী বোর্ডের বিষয়ে তাকে জানিয়েছি এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ হতে পারে না। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে পঙ্গু করে দেওয়ার অধিকার কারও নেই৷ সর্বশেষ গতকাল আমরা ২৬ টি দফা দিয়ে উপাচার্যের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি কর্ণপাত করেনি। আমরা জানি বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ শিক্ষকের অভাবে ক্লাস পরিচালনা করতে পারছে না। বারবার শিক্ষকের চাহিদা জানানোর পরও সেখানে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে না অথচ বাংলা ও আইন বিভাগের প্রয়োজন ছাড়াই নিয়োগ দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।

আইন অনুষদের সাবেক ডিন আবু নোমান বলেন, আমি আইন বিভাগের শিক্ষক। আমাদের বিভাগে ২৫ জন শিক্ষক রয়েছে। ৩ জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে বাইরে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী একজন অধ্যাপক কে সপ্তাহে ন্যুনতম ১০ টি করে ক্লাস নিতে হয়। একজন সহকারী অধ্যাপক কে সপ্তাহে নূন্যতম ১২ টি করে ক্লাস নিতে হয়। সেখানে আমি গত সাত আট বছরে সপ্তাহে ১ টির বেশি ক্লাস নিতে পারিনি। সেখানে কোর্স নাইতো কিভাবে ক্লাস নিবো? এ অবস্থায় যদি শিক্ষক নিয়োগ হয় তাহলে তা রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংসের শামিল।

ওশানোগ্রাফী বিভাগের অধ্যাপক ইনামুল হক বলেন, দেশের মানুষ এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যাস্ত কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষক ব্যাস্ত নিয়োগ নিয়ে। এটা এখন স্পষ্টত তার ব্যাবসা হয়ে দাড়িয়েছে ।

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দার চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধ্যাদেশ জারি করেন। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি সেই আইন লঙ্ঘন করে উপাচার্য বিভাগের প্রয়োজন ছাড়াই শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে। যা দুঃখজন। আর কিছু দিন পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এজন্য অনেক শিক্ষককে নির্বাচনী কাজ করতে হবে কিন্তু তা না করে এখন আমরা এখানে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, প্রগতিশীল ও সাম্প্রদায়িকতার শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা এ কর্মসূচি পালন করছে। ভবিষ্যতেও করবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে প্রয়োজন ছাড়াই আইন বিভাগের জন্য ২ জন এবং বাংলা বিভাগের জন্য ৭ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং আবেদনের যোগ্যতা অনেকাংশে কমিয়ে পছন্দের ব্যাক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে উপাচার্য। গতকাল ১৭ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড সভা বাতিলের দাবিতে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে উপেক্ষা করে অগোচরে উপাচার্যের বাংলোতে নিয়োগ বোর্ড সভা সম্পূর্ণ করা হয়।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল