সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

উপাচার্যের অবদানে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছরের পরিবর্তন

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
উপাচার্যের  অবদানে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছরের পরিবর্তন

তাসনীমুল হাসান মুবিন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: 

শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন যিনি, তিনি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬ এর ১০ (১) ধারা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর নিয়োগপ্রাপ্ত হন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে। বিশিষ্ট নজরুল গবেষক – অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ  উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন।

১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, উপাচার্যের কর্মদিবসের দ্বিতীয় বছর। যোগদানের দুই বছরে শিক্ষা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক পরিবর্তন এনেছেন তিনি। এবং আগামী দিনগুলোতেও এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন নিরলসভাবে। দুই বছরের পরিবর্তনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য যেসব অবদান তিনি রেখেছেন-

 উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেই একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও নিয়মিত প্রকাশ অব্যাহত রাখেন।
 তাৎক্ষণিক পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ে আলোচনা করেন ও খোঁজ রাখেন এবং সেই অনুযায়ী সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন ও বৃত্তি প্রদান করেন।

তাঁর সময়ই ৩০ লক্ষ টাকার ট্রাস্ট ফান্ড গঠন ও বৃত্তিপ্রদান চালু হয়। বর্তমানে এমন ফান্ড গঠন কার্যক্রম ক্রমবর্ধমান।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন এবং ধারাবাহিকভাবে নিয়মিত প্রকাশের ব্যবস্থা করেছেন। ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সেশন জট কমিয়ে আনা এবং একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ক্লাস, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন ও উদ্বোধন করেন।অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত দুইটি বিশাল পরীক্ষার হলসহ মোট ৬টি পরীক্ষার হল চালু করায় পরীক্ষা কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সনের সব প্রেস বিজ্ঞপ্তির সমন্বয়ে প্রথমবারের মতো ‘কর্ম-সঞ্চিতা’ নামে একটি প্রকাশনা উন্মোচন করেন।স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণের লক্ষ্যে ডি-নথি (ডিজিটাল নথি) কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

 বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে মূল্যায়ন করে উত্তীর্ণদের সনদপত্র প্রদান করেন।বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক প্রকাশিত বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২২-২০২৩ র্যাংকিংয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪তম অবস্থান অর্জন করে ।

মাননীয় উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মধ্যে সকল সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ১২০০ আসন বিশিষ্ট দুটি পৃথক আবাসিক হল (ছাত্র, ছাত্রী) চালু করে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত আবাসন ও পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন।
 স্পোর্টস ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন, যা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম। এই স্পোর্টস ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে প্রথম সংবিধানকেন্দ্রিক স্মারক-স্থাপনা ‘ধ্রব ’৭২’ সংবিধান আঙিনার উদ্বোধন করেন। যার চারটি স্তম্ভে ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলমন্ত্রগুলো নির্দেশ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নতুন বছরের ডায়েরি এবং ক্যালেন্ডার সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছেন।ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ কর্তৃক একটি অভিন্ন সিলেবাস প্রণয়ন এবং সিলেবাস অনুযায়ী ‘নজরুল স্টাডিজ’ পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছেন ।

‘প্রশাসনিক কাজে প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যবহার’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। প্রশিক্ষণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ কর্তৃক নজরুল প্রতিকৃতি চিত্র অ্যালবাম ‘কায়ার ছায়ায় নজরুল’ (২০২২) প্রকাশের ব্যবস্থা করেন।ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত মার্কেটিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং মার্কেটিং বিভাগের অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করে।

দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ‘শেখ রাসেল’ এর চতুর্দিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বেষ্টনিসহ প্রায় সাড়ে সাতশত বিভিন্ন জাতের বৃক্ষ রোপণ করেছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিদের সন্তানদের বিনোদনের জন্য ‘শেখ রাসেল’ নামে একটি শিশুপার্ক নির্মাণ করেছেন। যেখানে শেখ রাসেলের আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাড়ে তিনশত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য ১০তলা বিশিষ্ট কোয়ার্টার নির্মাণ আরম্ভ করেন, যার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।গ্রেড ১৭-২০ কর্মচারীদের জন্য ৬তলা বিশিষ্ট কোয়ার্টার নির্মাণ আরম্ভ করেন, যার নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য ১০তলা বিশিষ্ট দুইটি কোয়ার্টার নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন।শিক্ষক কর্মকর্তাদের জন্য ১০তলা বিশিষ্ট দুইটি ডরমিটরি নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন।কর্মচারীদের জন্য ১০তলা বিশিষ্ট দুইটি ডরমিটরি নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন।১০তলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক ইন্সটিটিউট ভবন নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন। 

 গুরুত্ব ও সৌন্দর্যবর্ধনকল্পে জয় বাংলা ভাস্কর্য স্থানান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ ও কার্যক্রম আরম্ভ করেন।
ভূ-গর্ভস্থ বৈদ্যুতিক সংযোগের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন কাজ আরম্ভ করেন।সোলার প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সকল রাস্তা সার্বক্ষণিক আলোকিত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ক্যাম্পাসে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিশেষজ্ঞের দ্বারা বৈদ্যুতিক সাব স্টেশনের রক্ষনাবেক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় প্রায় এক কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকার মহাসড়কে স্পিডব্রেকার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দুটি দৃষ্টিনন্দন গেট নির্মানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছেন।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লিখিত নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। এছাড়াও শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নে অবদানের জন্য তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটি প্রবর্তিত ‘দীনেশ-রবীন্দ্রপত্র’ সম্মাননা পদক-২০২৩ লাভ করেন। একইসাথে শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি অর্জন করেন ঋষিজ পদক-২০২৩। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা অদূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক খ্যাতি বয়ে আনবেন বলে মনে করেন তিনি।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল