সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

পূর্ব শত্রুতার জেরে ইবিতে সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়রদের মারধর

রোববার, জানুয়ারী ২১, ২০২৪
পূর্ব শত্রুতার জেরে ইবিতে সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়রদের মারধর

সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিশোধ নিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় ক্যাম্পাসের ঝাল চত্বরে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান উৎস, রিয়াজ উদ্দিন ও বাদশা। অন্যদিকে লিখিত অভিযোগে নাম উঠে আসা অভিযুক্তরা হলেন একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মাজহারুল ইসলাম নাঈম, মারুফ, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রানা, একই বর্ষের ল’অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগর নিসান, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ওলিউর রহমান ওলি ও বাংলা বিভাগের তাওহীদ তালুকদার।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২২ নভেম্বর বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে ক্যাম্পাসের মফিজ লেকে চড়ুইভাতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই সময় ভুক্তভোগী উৎস ভুলক্রমে অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশনের জন্য আনা একটি ওয়ানটাইম প্লেট ভেঙে ফেলেন। পরে এটা নিয়ে অভিযুক্ত নাঈম ও মারুফসহ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অন্যান্যরা উৎসসহ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সবাইকে গালমন্দ ও অপমান করতে থাকেন। তখন উৎসসহ তার সহপাঠীরা এর প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। মারামারির সময় উভয়পক্ষ একে অন্যদের দিকে প্লাস্টিকের চেয়ার ছুড়ে মারেন। এসময় চেয়ারের আঘাতে অভিযুক্ত নাঈম গুরুতর আহত হন এবং ভুক্তভোগীদের কয়েকজন সহপাঠীর হাত কেটে যায়। পরে শাখা ছাত্রলীগের মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষের মাঝে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। 

এ ঘটনার জের ধরেই আজ দুপুরে ভুক্তভোগীরা ক্লাস শেষে ঝালচত্ত্বরে গেলে মূল অভিযুক্ত নাঈম ও মারুফের নেতৃত্বে মাসুদ, জিসান, তাওহীদ, ওলিসহ ১০-১৫ জন কাঠের বাটাম ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালান। এসময় ভুক্তভোগীদের এলোপাতাড়ি মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। মারধরে ভুক্তভোগী উৎস তার কপাল ও পিঠে জখমসহ চোখে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তার বন্ধুরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চোখে আঘাতের ফলে ভেতরে কিছুটা রক্তক্ষরণ হয়েছে। সেটা খুব বেশি গুরুতর নয়। ব্যাথার ঔষধ, চোখের ড্রপসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ঔষধ লিখে দিয়েছি। এগুলো অনুযায়ী চললে ভালো হয়ে যাবে। এবং এক সপ্তাহ পর তাকে আবার দেখা করতে বলেছি।’

ভুক্তভোগী মাহমুদ হাসান উৎস বলেন, ‘সামান্য পাঁচ টাকার একটা প্লাস্টিকের প্লেট। ওইটা ভুলক্রমে ভেঙে যাওয়ার পর আমি অনেকবার সরি বলার পরও তারা আমাদের ব্যাচের সবাইকে আমাদের জুনিয়রদের সামনে অপমান করতে থাকে। এটা নিয়ে তখন আমাদের সাথে তাদের হালকা বাকবিতন্ডা হয়। এই সামান্য বিষয়টাকে তারা এত বড় ইস্যুতে পরিণত করেছে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারা এই হামলা করে।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুই মূল অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম নাঈম ও মারুফ বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমরা উপস্থিত ছিলাম না। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা।’

অথচ ভুক্তভোগী ছাড়াও প্রত্যদর্শীরা মারধরের সময় ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিত থাকার এবং মারধরে জড়িত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

আরেক অভিযুক্ত মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি ওখানে মারামারি করতে যাইনি। ওখানে মারামারি হচ্ছে দেখে আমি তাদের থামাতে গিয়েছিলাম।’

এছাড়া অভিযোগের বিষয়ে জানতে অন্য অভিযুক্তদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে বিভাগের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বিভাগ ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে। বিভাগ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সেক্ষেত্রে আমরা দেখব।’

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল