শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কেন বাড়ছে অস্থিরতা?

রোববার, জুন ১৩, ২০২১
কেন বাড়ছে অস্থিরতা?

আখতার ইবনে ওয়াহাব: ব্যক্তি থেকে পরিবার, পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাষ্ট্রে কেমন জানি অস্থিরতা বাড়ছে। দিন যতই সামনে যাচ্ছে অস্থিরতা কমছে না, বরঞ্চ বেড়ে চলেছে প্রবল গতিতে। সবাই শান্তির খোঁজে থাকলেও যেন অশান্তি চেপে ধরছে। অর্থের লোভে মরীচিকার পিছনে ছুটে চলা কিংবা প্রতারিত হচ্ছে।

ব্যক্তির জীবনে বন্ধুদের আড্ডা-মিলন কমে গেছে, ব্যস্ততা এবং প্রযুক্তির ছোঁয়ায় সবই ভার্চুয়াল জগতে পা বাড়িয়েছে। সব কিছুতে ব্যাকুলতা, অস্থিরতা। অর্থের আশায় কখনো কখনো অনেকে মরিচীকার পিছনে ছুটছে। অন্ধের পথে পা বাড়াচ্ছে কিশোর থেকে তারুণ্যেরা।

সাংসারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। জাগতিক চাহিদা, চিন্তা টাকার কাছে হার মেনেছে। অর্থই অনর্থের মূল এক সময় হয়তো ছিল, কিন্তু এই সভ্যতায় অর্থই সব কিছুর মূল। ভালোবাসা এখন অর্থের কাছে। অর্থ ছাড়া ভালোবাসা মূল্যহীন। পাওয়া গেলেও তা গুটিকয়েক। সাংসারিক যোগানে হিমশিম খেয়ে অন্যায়ের পথে পা বাড়াচ্ছে অনেকে। স্ত্রী কিংবা সন্তানদের সমাজের সাথে চাহিদা মেটাতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।

পারিবারিক বন্ধন এখন আর আগের মত নেই! বায়ান্ন কিংবা একান্নবর্তী পরিবার এখন নেই বললে চলে। এখন পশ্চিমা বিশ্ব কিংবা আধুনিকের খোঁজে এক পরিবার, এক সন্তান যথেষ্ট হয়ে গেছে। নেই দাদা-দাদী, নানা-নানীর প্রতি নাতিনাতনিদের শ্রদ্ধা, ভক্তি এবং ভালোবাসা। তেমনি মা-বাবার প্রতিও সন্তানদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ, আদেশ মান্য করা এবং শালীন ভাষা নেই। থাকবেই বা কিভাবে? মা-বাবার অবহেলার কারণে আজ এই প্রজন্ম তাদের দাদা-নানাদের ভুলতে বসেছে। অভিভাবকদের অমান্য করে শিখতে চলেছে। গ্রামের আবহমান ছোঁয়া থেকে এই প্রজন্ম অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। প্রযুক্তি এবং ব্যস্ততায় আজকাল মা-বাবার আদর যত্ম থেকেও অবহেলিত হচ্ছে সন্তানরা। একদিকে মা-বাবার কর্মব্যস্ত, অন্যদিকে দাদা-দাদী থেকে অবহেলিত এই প্রজন্ম কি শিখবে? বিগত কয়েক দশেক সময়কারও দাদা-দাদীদের থেকে গল্প শুনতে শুনতে নাতনি-নাতনীদের কিশোর বয়স পেরিয়ে যেতো। দাদার হাত ধরে নাতিরা মক্তবে কিংবা স্কুলে যেত। দাদা/নানা থেকে মূল্যবোধ শিখতে পারতো। দাদা/নানার আদেশ নিষেধ, আঁচার-আচরণ থেকে এই প্রজন্ম ভালো শিক্ষা নিতো। কিন্তু আজ সেই দিন সেই কাল নেই বললে চলে।

পরিবারগুলো এক কেন্দ্রিক হওয়ায় এই প্রজন্ম অনেকটা একঘেয়ে হয়ে গেছে। তাই প্রযুক্তির দিকে আসক্তি হচ্ছে। আড্ডার স্থল বেঁছে নিয়েছে। অযথা সময় ভালো-খারাপ বন্ধুদের সাথে কাটছে। সন্তানরা নষ্টের পিছনে দোষ প্রজন্মের নয়, অভিভাবকরা দায়ী!

সামাজিক জীবনে সমাজে মুরুব্বি/সর্দার ছিল। সেই সরদার ছিল গ্রাম/ইউনিয়ন এর সবার শ্রদ্ধার পাত্র, গণমান্য এবং স্নেহের মুরুব্বি। যার কথা সবাই শুনতো। সবাই মানতো। তিনিও ছিলেন অহংকারমুক্ত, ক্ষমতার দাপড় মুক্ত এবং রাজনৈতিক উর্ধ্বে। সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে পারতেন, শালিস বিচারে নিরেপক্ষ আচরণ করতেন। কিন্তু আজ সমাজ আছে, নেই গুণীজন, শিক্ষিত ব্যক্তি। যার শালিস নিরেপক্ষ, কথা হবে বাঘের ন্যায়। আছে রাজনীতি, আছে অর্থবিত্ত, আছে গ্যাং। তারাই এখন সমাজের অধিকর্তা। তাদের কথাই সমাজ চলে, বিচারের নামে অবিচার চলে, সুবিচারের আশায় নিবৃত্তে কাদেঁ। চলবে...

লেখক: তরুণ উদ্যেক্তা, সংগঠক এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিদ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল