শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

কমলনগরে পিআইওর ‘ঘুষের’ ১৬ লাখ টাকা উধাও

মঙ্গলবার, জুন ২৯, ২০২১
কমলনগরে পিআইওর ‘ঘুষের’ ১৬ লাখ টাকা উধাও

মো নিজাম. উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুররে কমলনগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রিয়াদ হোসেনের কার্যালয় থেকে ১৬ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একই কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আবদুল বাকেরসহ ৪ কর্মচারীকে পুলিশের দেন পিআইও। 

রাতে থানা হাজতে রেখে পরেরদিন দুপুরে তিনি নিজেই কর্মচারীদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। পুলিশ বলছে- জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার অফিসের ওই কর্মচারীদের ছাড়িয়ে নেন পিআইও নিজেই।

এদিকে, চুরি যাওয়া ১৬ লাখ টাকা নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। পিআইও’র নিজ কার্যালয়ে কিভাবে বড় অংকের নগদ অর্থ আসলো তা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়ে দিয়েছে। অনেকে এটাকে ঘুষের টাকা হিসেবে অখ্যায়িত করেছেন। যদিও পিআইও রিয়াজের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন আদায়সহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। তিনি রামগতি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং কমলনগর উপজেলার শূন্যপদে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন।

জানা গেছে, সোমবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় পিআইও রিয়াজ তার অফিসের কর্মচারী বারেককে ডেকে থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন। পরে ওই অফিসের মেহেদী, আলমগীরসহ আরও তিনজনকে পুলিশে দেন পিআইও। মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরের দিকে পুলিশের কাছ থেকে তাদের ছাড়িয়ে আনেন রিয়াজ।

অন্যদিকে, টাকা চুরির সন্দেহে সাময়িক আটক থাকা কম্পিউটার অপারেটর আবদুল বাকেরের স্ত্রী পিআইও রিয়াজের বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাবের অভিযোগ তোলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় টাকা চুরির মিথ্যা অপবাদ দেন বলে জানান বাকেরের স্ত্রী শারমিন আক্তার।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে লক্ষ্মীপুররে স্থানীয় একটি পত্রিকা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শারমিন আক্তার অভিযোগ করেন, পিআইও রিয়াদ কমলনগরে দায়িত্ব পাওয়ার পর একদিন স্বামী বাকেরের সঙ্গে দেখা করতে তিনি কার্যালয়ে যান। কার্যালয়ের পেছনেই সরকারি কোয়ার্টারে তারা থাকেন। ওইদিন দেখার পর থেকেই পিআইও বিভিন্নভাবে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজী না হওয়ায় তার স্বামীকে সদর উপজেলা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। ১১ মাস পর ফের তার স্বামী কমলনগরে যোগদান করে। কিন্তু পিআইও কাজ বুঝিয়ে দেয়নি। 

সোমবার ১৬ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে পিআইও রিয়াদ তার স্বামীসহ ৪ জনকে পুলিশের সহযোগীতায় থানায় আটকে রাখে। এরপর সন্ধ্যায় বাসায় এসে পিআইও নিজেই আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে রিয়াদ তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। মূলত কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ এনে তার স্বামীকে পিআইও থানায় আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

উপজেলা কার্যালয়ের কয়েকজনের ভাষ্যমতে, পিআইও’র কার্যালয়ে নগদ টাকা থাকার কথা নয়। তিনি ঠিকাদারদের টাকা চেকের মাধ্যমে দেবেন। টেন্ডারের পে-অর্ডারও চেকের মাধ্যমে। তাহলে তার কার্যালয়ে ১৬ লাখ টাকা কোথায় থেকে আসলো? আর টাকাগুলোও কিসের? যার জন্য এখনো তিনি পরিস্কারভাবে কোন অভিযোগ করতে পারছেন না। উল্টো ৪ জন কর্মচারীকে থানায় নিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছে।

একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ ব্যক্তি জানিয়েছেন, জুন ক্লোজিং উপলক্ষে পিআইও তাদের কাছ থেকে কমিশন নিয়েছেন। তাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে। ঘুষের এ ১৬ লাখ টাকা নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের বিল দেওয়ার কথা। দুদকের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্তে বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

এসব বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পিআইও রিয়াজ হোসেনের মোবাইল ফোনে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। কথা বলার জন্য বিকেলে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, পিআইও নিজেই সোমবার রাতে তার ৪ কর্মচারীকে থানায় নিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার দুপুরে তিনিই আবার তাদেরকে নিয়ে গেছে। কার্যালয় থেকে কিছু টাকা চুরির হওয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন ৪ কর্মচারীকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে কত টাকা তা জানায়নি। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগও করেনি।

জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাসেল ইকবাল বলেন, অফিসিয়ালভাবে ঘটনাটি পিআইও আমাকে জানায়নি। তবে আমি অন্য মাধ্যমে শুনেছি।

এ ব্যাপারে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি নিশ্চিত নয়। আটককৃতরা পিআইও অফিসের কর্মচারী। তাদের আভ্যন্তরীণ কোন সমস্যা হতে পারে, যার কারণে সেটা থানা পুলিশ পর্যন্ত পৌঁছে থাকতে পারে।

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল