নিজস্ব প্রতিবেদক:
হজের খুতবায় বছরের পর বছর ধরে নিপীড়িত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের মুক্তি ও বিজয় কামনা করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব মুসলিমের কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে দোয়া করা হয়েছে। মুসলিম উম্মাহকে ঈমান-আমল সংরক্ষণ ও সংশোধনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির দিকে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) স্থানীয় সময় বেলা ১২টার পর (বাংলাদেশ সময় তিনটার পর) ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরায় ১৪৪৬ হিজরি সনের হজের খুতবা দেন সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম ও বিচারবিদ শায়খ ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। এবারের হজের খুতবার অনুবাদ বাংলাসহ বিশ্বের ৩৫টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
খুতবায় ইমাম নসিহত করতে গিয়ে বলেন, ঈমানদারদের উচিত আল্লাহকে ভয় করা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা। তাকওয়া ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য। শয়তান মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু। মুসলমানদের উচিত পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা।
হজের খতিব বলেন, আল্লাহ তায়ালা ইসলামকে মানবজাতির জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করেছেন। যদি তুমি তোমার শত্রুকে ক্ষমা করো, তাহলে আল্লাহ তোমাকে তার বন্ধু বানিয়ে নেবেন।
শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ বলেন, সৎকর্ম পাপসমূহকে মুছে দেয়। তাই আমাদের উচিত যতটা সম্ভব নেক কাজের চেষ্টা করা। রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করো যেন তুমি তাকে দেখছ।
খতিব বলেন, ইসলাম ধর্মের তিনটি স্তর রয়েছে, যার মধ্যে সর্বোচ্চ স্তর হলো ‘ইহসান’। পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, নম্রতা প্রদর্শন এবং প্রতিশ্রুতি পূরণ করাও ইসলামেরই অংশ। আর লজ্জাশীলতা বা হায়া হলো ঈমানের একটি শাখা।
শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ বলেন, হজের সময় বেশি বেশি আল্লাহর জিকির (স্মরণ) করা উচিত, বেশি বেশি দোয়া করা উচিত এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ বলেছেন, নেক কাজে একে অপরকে সাহায্য করো এবং মন্দ কাজে বাধা দাও।
এর আগে পবিত্র সকালে থেকে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান নেন লাখ লাখ লাখ হাজি। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠে আরাফাতের ময়দান।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল বিধান। হজের খুতবার পর এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন হাজিরা। মাগরিব পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন। মাগরিবের নামাজ না পড়ে তারা চলে যাবেন মুজদালিফায়। সেখানে এক আজান ও দুই ইকামতে মাগরিব ও ইশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন।
মুজদালিফায় রাত কাটিয়ে সেখান থেকে কংকর সংগ্রহ করে হাজিরা আবার মিনার ময়দানে যাবেন। সেখানে শয়তানকে কংকর মারা এবং পশু কোবরানির বিধান পালন করবেন। এছাড়া বায়তুল্লাহয় গিয়ে ফরজ তওয়াফও আদায় করবেন তারা। পরে মিনায় এসে আরও দুই দিন অবস্থান এবং টানা দুই দিন শয়তানকে কংকর মারার মাধ্যমে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠঅনিকতা।
এমআই