রাফি উজ্জামান, রাবি প্রতিনিধি :
চাঁদাবাজির অভিযোগে আগেই বহিষ্কৃত হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের দুই নেতা। কিন্তু বহিষ্কারের পরও থামেনি তাদের কর্মকাণ্ড। সর্বশেষ ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে এক সাধারণ শিক্ষার্থীর পথরোধ করে চাঁদা আদায় করেছেন এই বহিষ্কৃত নেতারা। এমনকি ছাত্রদলের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায়। পরে বুধবার (২৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব ও কর্মী হাসিবুল ইসলাম হাসিব। এর আগে ছাত্রলীগের নেতার কাছে চাঁদাবাজির সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পরই কেন্দ্রীয় ছাত্রদল তাদেরকে যথাক্রমে সাংগঠনিক পদ ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন বলেন, “মাগরিবের নামাজ শেষে আমি এবং আমার বন্ধুরা বুধপাড়া জিয়া স্কুল রোড এলাকায় হাঁটছিলাম। এ সময় বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা আহসান হাবীব, হাসিব ও বিশালসহ ১০-১২ জনের মোটরসাইকেল বহর আমাদের পথরোধ করে। তারা আমাকে আলাদা করে নেয় এবং বিগত সময়ের ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের ছবি দেখিয়ে রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে। একপর্যায়ে তারা ২০০০ টাকা চাঁদা দাবি করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি তাদের জানাই, হলে থাকার জন্য কিছু বড় ভাইয়ের সাথে প্রোগ্রামে অংশ নিই, কিন্তু কখনো কোনো ছাত্র নির্যাতন বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের পক্ষে সক্রিয় ছিলাম—এই প্রমাণও দিই। তবুও তারা আমাকে মারধর করে। পরে আমি ১৫০০ টাকা দিয়ে কোনোমতে ছাড়া পাই। তারা আমাকে হুমকি দেয়, ভবিষ্যতে ছাত্রদলের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ ঘটনার পর থেকে আমি চরম মানসিক বিপর্যয়ে আছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত আহসান হাবিব বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জসিম রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিবের ক্যাডার। শাহ মখদুম হলসহ পুরো ক্যাম্পাসে সে চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে সে নিরীহ সাজার চেষ্টা করছে। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে একটা প্রোগ্রামে যাওয়ার পথে রাস্তায় ওর সাথে দেখা হয়। তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। কিন্তু সে উল্টো আমাদের সাথে দূর্ব্যবহার করে। রাত আড়াইটার দিকে বিশেষ কারো মদতে ছাত্রদলকে হেয় করার উদ্দেশ্যে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে মাত্র ১৫০০ টাকা চাঁদাবাজির কাল্পনিক পোস্ট করছে। সে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এ মিথ্যাচার করছে। এর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এমআই