মো. সারওয়ার হোসেন, চবি প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শতভাগ আবাসন, চাকসু নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারসহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে চবি শাখা ছাত্রশিবির।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এটি অনুষ্ঠিত হয়৷
এ সময় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের " চতুর্দিকে স্বৈরাচার, কবে হবে বহিষ্কার ", "জুলাইয়ের প্রশাসন, দাও শতভাগ আবাসন ", " বাহ! প্রশাসন চমৎকার, ফ্যাসিবাদের পাহারাদার" , "আট বছরে অনার্স শেষ, সাদা হলো মাথার কেশ!", "তোমার আমার অধিকার—চাকসু, চাকসু" , "মাথার উপর ছাতা দে, নয় আবাসন ভাতা দে " ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রশিবিরের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ড এখন যেন শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবিক উন্নয়ন কিংবা সমস্যা সমাধানের চেয়ে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আর পোস্ট দিয়েই ব্যস্ত থাকেন। মনে হয়, প্রশাসনের অনেকে এখন বড় মাপের ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্ট কিংবা ব্লগারে রূপ নিয়েছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। উন্নয়নের গল্প তারা যতটা ফেসবুকে তুলে ধরেন, বাস্তবে তার সামান্য প্রতিফলনও আমরা দেখি না।”
এ সময় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, “আমরা দেখতে পাই, কখনো শিক্ষকদের বাসে বা খাবারে কোনো ধরনের সমস্যা হয় না। তাদের জন্য সব সময়ই সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে—যদি শিক্ষকদের জন্যই সব সুবিধা বরাদ্দ থাকে, তবে শিক্ষার্থীদের জন্য কেন নয়? এই বিশ্ববিদ্যালয় কি কেবল শিক্ষকদের জন্য? যদি তাই হয়, তাহলে এর নাম পরিবর্তন করে সরাসরি ‘চট্টগ্রাম শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়’ ঘোষণা করে দিন। এরপর আপনাদের গবেষণার বিষয় হোক—কীভাবে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করা যায়।”
চবি ছাত্রশিবিরের সাত দফা দাবিগুলো হলো— শতভাগ আবাসন নিশ্চিত ও অনাবাসিকদের জন্য ভাতা প্রদান করতে হবে। সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার আধুনিকায়ন করতে হবে। নিরাপদ ও পর্যাপ্ত যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও হল সংস্কার করতে হবে। জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় নির্যাতনে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগে জড়িতদের বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
এতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য মো. ইব্রাহিম রনি, শাখা শিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক রুহুল আমিন আবির, বিভিন্ন হল ও অনুষদের নেতৃবৃন্দসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এসবের মধ্যে রয়েছে সংস্কার ক্যাম্পেইন, প্রতীকী সিট বণ্টন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।
একে