জেলা প্রতিনিধি:
পতিত আওয়ামী লীগের আমলে দেশজুড়ে গডফাদারদের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। বাংলাদেশের মাটি থেকে এসব গডফাদারতন্ত্র, মাফিয়াতন্ত্রকে উচ্ছেদ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ শনিবার (১৯ জুলাই) কক্সবাজারে জুলাই পদযাত্রায় নাহিদ বলেন, 'গত ফ্যাসিস্ট আমলে কক্সবাজার সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য হয়ে গিয়েছিল। মাদকের অভয়ারণ্য হয়ে গিয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে যেমন গডফাদার ছিল, কক্সবাজারেও গডফাদার ছিল। শেখ হাসিনা একজন গডফাদার, আর তার আন্ডারে ছোট ছোট গডফাদার পুরো বাংলাদেশজুড়ে ছিল। আমরা সেই গডফাদারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছি। আমরা আবার নতুন কোনো গডফাদারের আবির্ভাব হতে দেব না। গডফাদারতন্ত্র-মাফিয়াতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র-স্বৈরতন্ত্র এই সবকিছুকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে।'
এদিন বেলা সোয়া দুইটার দিকে কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড়ে পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। 'দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি'র অংশ হিসেবে এনসিপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
এর আগে বেলা সোয়া একটার দিকে শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে পদযাত্রা শুরু করা হয়। পদযাত্রায় অংশ নেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রমুখ।
শহরের প্রধান সড়কের পাঁচ কিলোমিটার পদযাত্রা শেষে বেলা পৌনে দুইটায় পদযাত্রাটি শহীদ দৌলত ময়দানে পৌঁছে। পদযাত্রার স্লোগান ছিল 'কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপদাদার?', 'ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা', 'আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম', 'আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না', 'ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ' ইত্যাদি।
সমাবেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমরা বলেছি—জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ হতে হবে। কে পিআর বোঝে, কে পিআর বোঝে না, এ জন্য সংস্কার আটকে থাকবে না। আমরা জানি জনগণ সংস্কার বোঝে, জনগণ সংস্কার চায়। ফলে অবশ্যই উচ্চকক্ষে পিআর হতে হবে। নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে নিরপেক্ষভাবে নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিটি করতে হবে। এই দুইটা সংস্কার প্রস্তাবনা ঐকমত্য হলেই জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি হয়ে যায়।' আগামী ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে জড়ো হচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ আমরা অবশ্যই আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।'
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, 'রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য আমাদের দরদ আছে। তাই বলে রোহিঙ্গাদের বছরের পর বছর বাংলাদেশে রাখা যাবে না। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়দের যেন ক্ষতি না হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, দ্রুত প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা নিতে হবে।'
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, তাসনিম জারোসহ এনসিপির অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।