নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকায় ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদল–যুবদলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে শিবিরের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চকবাজারের গুলজার মোড় ও কাঁচাবাজার মোড় এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয় এবং রাত আড়াইটা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে উত্তেজনা।
জানা গেছে, চকবাজার এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে সদ্য বহিষ্কৃত যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশাহর অনুসারীরা মহসিন কলেজের ছাত্র আরিফুল ইসলামসহ জামায়াতপন্থী কয়েকজনকে পুলিশে দেয়। পরে আরিফকে একা পেয়ে বাদশাহর অনুসারীরা তাকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
আরিফকে থানায় নেওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রশিবির দাবি করে, আরিফ তাদের সংগঠনের একজন সক্রিয় কর্মী। ফলে তাকে ছাড়াতে শিবিরের নেতাকর্মীরা থানায় গেলে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এর জেরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) সভাপতি তানজির হোসেন জুয়েল বলেন, “আমাদের কর্মী আরিফুল ইসলামকে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা মারধর করে থানায় দিয়েছে। পরে থানায় গিয়ে আমরা হামলার শিকার হই।”
শিবিরের প্রচার সম্পাদক সিরাজী মানিক বলেন, “একজন আহত কর্মীকে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে থানায় দেওয়া হয়েছিল। এর প্রতিবাদে আমরা থানায় গেলে ছাত্রদল ও যুবদলের লোকজন আমাদের ও পুলিশের ওপর হামলা করে।”
অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ বলেন, “মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতা আমাদের এক কর্মীকে মারধর করেন। পরে তাকে চিনে ফেলায় আমাদের কর্মীরা তাকে থানায় হস্তান্তর করে। কিন্তু শিবির ওই নেতাকে ছাড়াতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে।”
ছাত্রদল এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, “শিবির-জামায়াতের নেতারা ছাত্রদলের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল কবির বলেন, “এক ছাত্রকে ছাত্রলীগ বলে পিটিয়ে ছাত্রদল থানায় দেয়। পরে শিবির দাবি করে সে তাদের কর্মী। বিষয়টি ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছে।”
সংঘর্ষের পর চকবাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীও কিছু সময়ের জন্য মোতায়েন ছিল, বলে জানায় স্থানীয় সূত্র।
ঘটনার পর চকবাজার এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নগরবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে—বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায়।
একে