বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে অপপ্রচার; অধ্যাপক পারভেজের বিবৃতি

মঙ্গলবার, জুলাই ২২, ২০২৫
যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে অপপ্রচার; অধ্যাপক পারভেজের বিবৃতি

সময় জার্নাল ডেস্ক:

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতরে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সম্পূর্ণ অজ্ঞতা ও ষড়যন্ত্রমূলক উদ্দেশ্যের কারণে অনেকে মারাত্মক ভুল তথ্য ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জিওপলিটিক্যাল ইকোনমিস্ট অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।

(২২ জুলাই) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অধ্যাপক পারভেজ জানান, ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে আমি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ সহ বর্তমানে  এএইউবি এর যথাক্রমে সিভিল স্পন্সর কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও স্পন্সর কমিটির চেয়ারম্যান  হিসেবে আছি। আমাদের তিন বাহিনীর সামর্থ্য ও যোগ্যতা সম্মন্ধে আমার অনেকটা জ্ঞান আছে। ২১শে জুলাই আমাদের বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানের দুর্ঘটনা কবলিত হওয়া নিয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা ও ষড়যন্ত্রমূলক উদ্দেশ্যের কারণে অনেকে মারাত্মক ভুল তথ্য ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এটা আমাদের বাহিনী গুলোর মরাল, আত্মসম্মান কমানোর অপপ্রয়াস হতে পারে। আমি প্রিয় দেশবাসীকে একেবারে গোমূর্খ ব্যক্তিদের ফেসবুক পোস্ট দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ফ্লাইট  সেফটি বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করছেন তাই কোন মন্তব্য করা সমচীন নয়। 
যে কোনো বিমান দুর্ঘটনার সাথে সাথে একটি প্রশ্ন উঠে।  দুর্ঘটনার কারণ কি  হিউমান অ্যারোর নাকি মেকানিক্যাল  ফল্ট? আমার জ্ঞান থেকে আমার মনে হয়েছে এই দুর্ঘটনার পিছনে হিউম্যান অ্যারোর  বা মেকানিক্যাল ফল্ট দায়ী নয়। আমার মনে হয়েছে, এই দুর্ঘটনার পিছনে টেকনোলজিক্যাল বা প্রযুক্তিগত ত্রুটি  দায়ী। পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ার কে জানিয়েছিলেন হাইট গেইন করতে পারছেন না। নির্ভর যোগ্য সূত্রে হতে জানা গেছে পাইলটের হাতে দুটো অপশন ছিল, তাৎক্ষণিকভাবে ইজেক্ট করা অথবা গ্লাইডিং করে রানওয়েতে ফিরে আসা। 

বিমান বাহিনীর বর্তমান প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের সাথে বিমান বাহিনীর প্রধান হওয়ার আগে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজে একসাথে কাজ করার আমার সৌভাগ্য হয়েছে। তিনি ১২ জুন, ২০২৪ সালে বিমান বাহিনী প্রধান হিসাবে যোগ দেন।

আমি তাকে আমাদের বিমানবাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অন্যতম সেরা, সূক্ষ্মদর্শী, দক্ষ ও পেশাদার বিমানবাহিনী কর্মকর্তা হিসেবে পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে কখনো সামান্য বিতর্ক উঠে নাই। এবারের এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে এমন সব ব্যক্তি লিখছেন তারা শুধু দেশবাসীকে নয় আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে বিভ্রান্ত করেছে যে এফ-৭ বিজিআই একটি ট্রেনিং এয়ারক্রাফ্ট। এফ-৭ একটি চাইনিজ  যুদ্ধবিমান।  এই এফ-৭ যুদ্ধ বিমানগুলোকে মিগ-২১ এর আদলে রিফাবিশ করে রাখা হয়েছে। আমাদের যুদ্ধ বিমান বহরে এখনো প্রায় ৩২ টির মতো এফ-৭ যুদ্ধ বিমান সক্রিয় আছে।

এই বিমানগুলো বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ডেলিভারি পেয়েছে ২০১২-১৩ সালে। চীন নিজেরা এই বিমান উৎপাদন বন্ধ করে দেয় ২০১৪ সাল থেকে।

বাংলাদেশে এই মডেলের বিমান এর আগেও আরও দুইবার দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুরে ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু নিহত হন। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ এমবি। এতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ নিহত হন।

আমাদের যুদ্ধবিমানের বহরে এই এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধ বিমান ব্যবহার বন্ধ করা, এই এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান গুলোকে অন্য কোন কাজে বা অন্য কোন দেশে  নাম মাত্র মূল্যে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। 

এই বিমানগুলোকে নিয়ে আমরা এখন কি করবো তা রাষ্ট্রপতি ( সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ), প্রধান উপদেষ্টা ,ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্ধারণ করবেন। ঢাকায় পাইলট ট্রেনিং হবে কিনা, যশোরে হবে কিনা, চট্টগ্রামে হবে কিনা এই সিদ্ধান্ত জাতীয়  নিরাপত্তার সাথে জড়িত সিদ্ধান্ত এবং চলমান প্রক্রিয়া। এই দুর্ঘটনা থেকে আমাদের এখন বাস্তবভিত্তিক যুগ উপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিশেষে আমাদের বিমান বাহিনীকে দেশীয় আন্তর্জাতিক সমস্ত ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। সবাইকে খেয়াল করতে হবে পাইলট প্লেন থেকে নেমেছে কিনা এই বিষয়ে মিথ্যা প্রচার ও রোমান্টিক  প্রচারণা করা হয়েছে।  ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির একজন সম্পূর্ণ প্রশিক্ষিত পাইলট।  তার বয়স ২৮ ,তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অপারেশনাল পাইলট অর্থাৎ  বর্তমানে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। সেদিন একক ভাবে যুদ্ধ বিমানের বিভিন্ন রকমের কসরত করার জন্য তিনি আকাশে উড়েন এবং  দূর্ভাগ্যবশত দুর্ঘটনা কবলিত হন।
এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল