শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

গাজায় ক্ষুধাও বোমার মতো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে

বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৪, ২০২৫
গাজায় ক্ষুধাও বোমার মতো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

“এখন ক্ষুধাও বোমার মতো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। মানুষ এখন আর চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য চাচ্ছে না। গাজার মানুষেরা ‘ধীরে ধীরে, যন্ত্রণাদায়ক এক মৃত্যুর’ দিকে ধাবিত হচ্ছে, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত এক দুর্ভিক্ষের ফল।” আল জাজিরার তারেক আবু আজ্জুম গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে এ মন্তব্য করেন।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সৃষ্ট এই পরিস্থিতিতে অনাহারে নতুন করে আরও ১০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ১০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে অপুষ্টিজনিত কারণে গাজায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১ জনে। আর এর বেশিরভাগই গত কয়েক সপ্তাহে ঘটেছে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৪ জন মানবিক সহায়তা নিতে যাওয়া মানুষও রয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যেসব শিশু মারা গেছে, তাদের মধ্যে ২১ জনের বয়স পাঁচ বছরের নিচে। সংস্থাটি বলছে, মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৮০ দিন তারা গাজায় কোনো খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাতে পারেনি। বর্তমানে কিছু খাদ্য সহায়তা পাঠানো শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এক যৌথ বিবৃতিতে মার্সি কর্পস, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল এবং রিফিউজিস ইন্টারন্যাশনালসহ ১১১টি আন্তর্জাতিক সংগঠন জানিয়েছে, “গাজায় এখন গণ-অনাহারের পরিস্থিতি চলছে”। অথচ সীমান্তের বাইরে বিপুল পরিমাণ খাদ্য, পানি ও ওষুধ মজুদ থাকলেও সেগুলো সহায়তাকারী সংস্থাগুলো প্রবেশ করাতে পারছে না।

ইসরায়েল চলতি বছরের মার্চ মাসে গাজায় সব ধরণের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এরপর মে মাসে অল্প পরিমাণে সহায়তা প্রবেশ করতে শুরু করে, যা বিতরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় প্রবেশ ও প্রস্থানের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখে সহায়তার প্রবাহ আটকে দিচ্ছে। মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত মানবিক সহায়তা নিতে আসা শত শত ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জরুরি বিভাগের পরিচালক রস স্মিথ বলেন, “গাজায় কাজ করার জন্য আমাদের কিছু ন্যূনতম শর্তের প্রয়োজন আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে— বিতরণ কেন্দ্র বা খাদ্য কনভয়ের আশপাশে কোনো সশস্ত্র বাহিনী যেন না থাকে।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফিলিস্তিনি অঞ্চলের প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন জানান, সহায়তা নিতে আসা মানুষদের ওপর হামলার কারণে গাজার কয়েকটি হাসপাতাল এখন বিশাল ট্রমা ওয়ার্ডে পরিণত হয়েছে। এমন অবস্থায় চিকিৎসক, শিক্ষক এমনকি সাংবাদিকরাও নিজেদের কাজ করতে পারছেন না, কারণ তারাও চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন।

গাজার আল-শিফা হাসপাতালের আমেরিকান চিকিৎসক নুর শরাফ বলেন, “মানুষ দিনের পর দিন না খেয়ে থাকছে, আর ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। এমনকি অনেক চিকিৎসকও খাবার পাচ্ছেন না, তবুও তারা কাজ করে যাচ্ছেন।”

সূত্র: আল-জাজিরা 

একে 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল