ডিআইইউ প্রতিনিধি:
গত ১ বছর ধরে সংস্কারের দাবানল চলছে। ১১ টি সংস্কার কমিশন হয়েছে। ড. ইউনুসের উপর আমাদের এতো আশা ছিলো, সেখানে সংস্কারের দাবানল করছে শিক্ষা সংস্কার বাদ দিয়ে। আজ পর্যন্ত দেখেছেন কখনো কোনো নীতি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত হয়েছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে তিনি বসেছেন, যে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনের জন্য কি করা উচিত? অথচ ড. ইউনুসের এই সরকার এ বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করছেন না, শিক্ষারও তিনি করছেন না ’ – জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এমন কথা বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মরণে ‘জুলাই স্মৃতিচারণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ঘুরিয়ে দিয়েছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। সেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃতি আমরা সেভাবে দেখিনি। তাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েরকে বাদ দিয়ে কিছু লেখা সম্ভব নয়’ – জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এমন কথা বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী।
তিনি আরও বলেন, যে অভূতপূর্ণ অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল ১৫ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছিলো সেখানে আমি ছিলাম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাগুলো ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে আমাদের অবস্থান এবং জাবির যে ভূমিকা। এরপর আপনারা জানেন যে ১৬ জুলাই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। পরেরদিন ১৭ জুলাই আপনারা জানেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর ১৮ তারিখ সারা বাংলাদেশকে ঘুরিয়ে দিয়েছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আমার প্রিয় ডিআইইউ এর শিক্ষার্থীরা, ইস্ট ওয়েস্ট, ইউআইইউ, নর্থ সাউথ, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, আপনারা জানেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি পরিমাণ ট্রমাটাইজ ছিলো। এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব সমন্বয়করা নেতা হয়েছেন, বড় বড় দল গঠন করেছেন, রাষ্ট্র গঠন করছেন, সরকার গঠন করেছেন, দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা সেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কতটুকু স্পেস দিয়েছেন? আপনারা যারা সারা বাংলাদেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আপনাদের সেই দলের মধ্যে কয়টা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়টা শিক্ষার্থী আছে?
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে আহত একাধিক শিক্ষার্থী তাদের অভিজ্ঞতা ও সেই সময়কার স্মৃতি তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্যে আন্দোলনের পটভূমি, প্রেরণা ও পরিণতি তুলে ধরা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. ফয়জুল হক, ফেইস দ্যা পিপলের সম্পাদক সাইফুর সাগর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রশিদুল ইসলাম রিফাত, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক মো. আবু সাদিক (কায়েম), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, ইয়ুথ ফর বেটার ফিউচার সোসাইটির মুখপাত্র রওশন জামিল রাকিব, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার আহমেদ, জুলাই ঐক্যের মুখপাত্র মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ, এনসিপি যুগ্ন আহ্বায়ক ড.আতিক মুজাহিদ প্রমুখ।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র সাহা, প্রক্টর ও প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ।
সন্ধ্যায় এক জাঁকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এমআই