ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোর চিনিকলে নাইট গার্ডদের বেঁধে রেখে প্রায় কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত দল। এ ঘটনায় নৈশ প্রহরিসহ দুজনকে সাময়িক অব্যাহত দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে একই রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার কয়েন বাজারে সার কীটনাশকের দোকানের চাল কেটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে নাটোরের পুলিশ সুপার মোঃ আমজাদ হুসাইন সহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
শনিবার(২ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে শহরের হুগলবাড়িয়ায় অবস্থিত চিনিকলে গভীর রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকার যত্রাংশ ও মালামাল খোয়া যাওয়ার হিসাব পাওয়া গেছে। তবে উল্লেখযোগ্য লুট হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে , মিল হাউজ গান মেটাল জার্নাল বিয়ারিং ১০ টি প্রতিটি বিয়ারিং এর ওজন ১৬০ কেজি যার মূল্য ৪৫ লক্ষ টাকা, ইলেকট্রিক্যাল তার সহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল প্রায় ১০ লক্ষ টাকা, ৩০০ কেজি বিভিন্ন সাইজের ব্রাশ ল্যাপটপ ১০টি মূল্য ৭ লক্ষ ৫০ হাজার, বিভিন্ন পাম্পের ইম্পেরাল ব্রাশ ৮ পিস ৪ লক্ষ টাকা, ওয়েল্ডিং কেবল একটি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, মিল হাউজ স্ক্রিন্ড জুস পাম্প ২টি ৬ লক্ষ টাকা, আলমারির ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় টুলস ৫ লক্ষ টাকা, মোলাসেস পাম্পের ষ্টার ও রোটর ব্রাশ দুইটি দুই লক্ষ , সিরাপ পাম্প ১পিস তিন লক্ষ টাকাসহ প্রায় কোটি টাকার মালামাল লুট হয়েছে।
নাটোর সুগার মিলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আখলাছুর রহমান জানান, নাটোর সুগার মিলের পিছনের ফটক দিয়ে গত শনিবার রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে ২০-৩০ জনের সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল মিলের ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় নিরাপত্তা নৈশপ্রহরীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মিলের বয়লায় হাউজের মধ্যে আটকিয়ে রাখে। পরে ডাকাত দল কারখানার তালা ভেংগে মিল হাউজের গান মেটাল জার্নাল বেয়ারিংসহ ওয়ার্কসপ হাউজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ লুট করে বের হয়ে যায়। পরে ভোরের দিকে একজন নৈশ প্রহরী কৌশলে তার বাঁধন খুলে মিলের হুইসেল বাজিয়ে দেয় এবং অন্য প্রহরীদের বাঁধন খুলে দিয়ে মসজিদের মাইক থেকে ডাকাতির ঘটনাটি জানান সবাইকে। খবর পেয়ে মিল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মিলে এসে পুলিশকে জানায়। প্রাথমিকভাবে ৯০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে জানান তিনি।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, বিষয়টি জানার পরই ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। প্রযুক্তিগত কিছু ভিডিও ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। মিলের অভ্যান্তরীণ লোকজনের সম্পূক্তা রয়েছে কি না। এই দুইটি বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি।
প্রকৃত এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা দ্রুত আমরা বের করতে সক্ষম হবো। এ ঘটনায় আমরা কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়েছি। তদন্তে সাপেক্ষে পরবর্তীতে আপনাদের জানাবো। তদন্তের পর কি পরিমান মালামাল লুট হয়েছে তা জানা যাবে।
অপরদিকে জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার কয়েন বাজারে সার ও কীটনাশকের ডিলারের দোকানে নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ কীটনাশক সামগ্রী চুরির ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত রাতের কোন এক সময় কয়েন বাজারের মোজাফফর হোসেনের মেঘলা এন্টারপ্রাইজ-এ এই চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানদার সকালে দোকান খুলে সব কিছু এলোমেলো দেখতে পান। পরে ক্যাশ বাক্স ভাঙ্গা দেখতে পেয়ে সেখানে থাকা মালামাল বিক্রির প্রায় ৫০ হাজার টাকা খোয়া যাওয়া নিশ্চিত হন। তবে কি পরিমান কীটনাশক চুরি হয়েছে তা হিসাব নিকাশ করে দেখা হচ্ছে।
এমন ঘটনায় অন্যান্য দোকানদারদের মধ্যেও ভীতি ও আশঙ্কা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এমআই
