রাফি উজ্জামান, রাবি প্রতিনিধি:
‘জুলাই আন্দোলনকে শুধুমাত্র গণ অভ্যুত্থান বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। কিন্ত আমরা একটা বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছিলাম। গণ অভ্যুত্থানকে বিপ্লবে পরিণত করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের র্যালি পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মো. ইব্রাহিম।
এর আগে বিকেল ৪ টায় ‘রাবি শাখা ছাত্রশিবির’-এর ব্যানারে বিনোদপুর বাজার থেকে 'জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ' শিরোনামে একটি র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি নগরীর তালাইমারি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ‘ইসলামি ছাত্র শিবির জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ', 'দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ ','শিবিরের অপর নাম, আদর্শ সংগ্রাম', 'ইনকিলাব ইনকিলাব,জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ', 'জুলাইয়ের হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পরে বৃদ্ধ, পেশাজীবী, শিক্ষার্থী সবাই যেভাবে আবেগ অনুভূতি নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম, এক বছর পরবর্তী সময়ে এসে আজ আমাদের সেই অনুভূতি নাই। গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরেও এখনও সংস্কারের জন্য আমাদের রাস্তায় নেমে স্লোগান দিতে হচ্ছে।’
ইসলামি ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন,' গত বছরের পাঁচই আগস্টে আমাদের রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মিছিলের সামনে থেকে ছাত্র জনতাকে রক্ষা করার জন্য। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবির কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মিছিলের পিছন থেকে যদি কোন আক্রমণ করা হয় সেটি রুখে দিতে। আমরা আমাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছি। তার প্রমাণ হলো ছাত্রজনতার গায়ে গুলি লাগার আগে আমার ভাই আলী রায়হানের গায়ে গুলি লাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা বলেন আন্দোলনে শিবিরের ভূমিকা কী ছিল? তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই,আমরা যে আন্দোলন করেছি তার সবচেয়ে বড় প্রমান আমাদের ভাই আলি রায়হান।'
সমাবেশে শাখা ছাত্রশিবিরের বায়তুল মাল সম্পাদক মুজাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গত ১৬ বছর আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারিনি, আমাদের মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মীদের জেলে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বিপ্লবের পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে বিপ্লবী ভূমিকা পালন করার কথা ছিল, তা পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ উপাচার্য আপনি সুশীলগিরি বাদ দিয়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারে প্রশাসনকে সহায়তা করুন। নাহলে ছাত্রজনতা স্বৈরাচারকে যেভাবে গদি থেকে নামিয়েছে, আপনাকেও নামাতে সময় লাগবেনা।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন করেন শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক হাফেজ মেহেদী হাসান। কর্মসূচিতে শাখা ছাত্রশিবিরের দুই শতাধিক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই