আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা ভারতের আসাম রাজ্য সরকার স্থানীয় ‘আদিবাসী’ বাসিন্দাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। রাজ্যটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় সেখানে মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
এর আগে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘অসমীয়া ভাষাভাষী জনগণ বাংলাদেশের দিক থেকে, এমনকি নিজেদের গ্রামেও হামলার হুমকির মুখে রয়েছে।’
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার রাজ্য আসাম। এ রাজ্য বহু জাতিগোষ্ঠী, ভাষা ও ধর্মভিত্তিক বিভাজন-সংবলিত। গত কয়েক দশকে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বিপর্যস্ত হয়েছে আসাম। ২০১১ সালের সর্বশেষ জাতীয় জনশুমারি অনুযায়ী, আসামের প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ মুসলিম, যাদের বেশির ভাগই বাংলাভাষী। বাকিরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
ভারতের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গত বুধবার তিনি একটি ওয়েবসাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রাজ্যের যেসব আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিজেদের জীবনের জন্য হুমকি অনুভব এবং সংবেদনশীল এলাকায় বসবাস করেন, তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে ভারতে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন অত্যন্ত কঠোর। এ কারণে অস্ত্রের লাইসেন্স উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ায় তাঁর তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতারা। সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের আইনপ্রণেতা গৌরব গগৈ বলেছেন, ‘রাজ্য সরকারের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার এই উদ্যোগে গ্যাং সহিংসতা ও ব্যক্তিগত প্রতিশোধমূলক অপরাধ বাড়বে। এটি সুশাসন নয়, বরং আইনহীনতার দিকে এক বিপজ্জনক পশ্চাৎগামী পদক্ষেপ।’
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার পদক্ষেপ বাংলাভাষী মুসলমানদের নিশানা করেই নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদির বিজেপির ঘনিষ্ঠ মিত্র আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত এক বছরে আসামে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। হিমন্ত শর্মা সতর্ক করে বলেছেন, রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলার আদিবাসী জনগণ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে নিরাপত্তাহীন পরিবেশে বসবাস করছেন।
এমআই