নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) একটি গোলটেবিল বৈঠকে অবরুদ্ধ হয়ে পুলিশে হাতে সোপর্দ হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানসহ (কার্জন) সবাইকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) নাসিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে একদল ব্যক্তি নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে পুলিশে সোপর্দ করে। সেখান থেকে তাঁদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ‘মঞ্চ ৭১’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল গণফোরামের সাবেক সভাপতি ড. কামাল হোসেনের। তবে তিনি আসেননি। সকাল ১০টায় গোলটেবিল আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১১টায় আলোচনা সভাটি শুরু হয়।
আলোচনা সভায় প্রথমে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন)। তিনি বলেন, 'আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে জামায়াত শিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের জুতার মালা পরাচ্ছে।'
শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরই মিছিল নিয়ে একদল ব্যক্তি ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢোকেন। এ সময় তাঁরা 'জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার', 'লীগ ধর, জেলে ভর', 'জুলাইয়ে যোদ্ধারা এক হও লড়াই করো' প্রভৃতি স্লোগান দেন।
একপর্যায়ে তাঁরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। দুপুর সোয়া বারোটার দিকে পুলিশের (ডিএমপি) একটি দল আসলে তাঁরা পুলিশের কাছে লতিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জনকে তুলে দেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, মঞ্চ ৭১-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ।
দুপুর সোয়া ১২টার পর পুলিশের কয়েকজন সদস্য লতিফ সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকজনকে পুলিশ ভ্যানে নিয়ে যান বলে জানান পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আসাদুজ্জামান।
এ ব্যাপারে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি জানতাম না এখানে সমস্যা হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েই এসেছিলাম।’
পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আল আমিন রাসেল নামের একজন বলেন, ‘এখানে পতিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে ষড়যন্ত্র করছে। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে এমন কিছু আমরা মেনে নেব না।’
এমআই