ক্রীড়া প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় দীর্ঘ মেয়াদে বোর্ডে থাকার পরিকল্পনা ছিল না আমিনুল ইসলাম বুলবুলের। তবে এখন মত বদলালেন তিনি। আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে পরিচালক পদে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
আজ সিলেট জেলা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে অবকাঠামো ও সুবিধা-অসুবিধা ঘুরে দেখেন বুলবুল। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, দেশের প্রয়োজনে তিনি বিসিবিতে আরও কাজ চালিয়ে যেতে চান। তার ভাষায়, ‘আমি দেশের জন্য ক্রিকেট অঙ্গনে আরও কাজ করতে চাই।’
আগামী ৪ অক্টোবর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে প্রসঙ্গে বুলবুল বলেন, ‘অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে আমরা ইনশাআল্লাহ নির্বাচন করব। এখানে সভাপতি নয়, পরিচালকদের নির্বাচন হয়। সেটিই মূল লক্ষ্য এবং আমি সেখানে থাকার চেষ্টা করব।’
আইসিসিতে দীর্ঘ সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়েই দেশের ক্রিকেটে যুক্ত হন বুলবুল। তবে বিসিবিতে দায়িত্ব নিয়েছিলেন মূলত অস্থায়ীভাবে। কয়েক দফায় তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন, সীমিত সময়ের জন্য বোর্ডে আসা তার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে কাজ করার পর সেই ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।
এমনকি গত ২৮ আগস্ট বিসিবি সভাপতি থাকাকালীন এক বক্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত যে ইচ্ছা... আমি হঠাৎ করে এখানে এসেছি এবং দায়িত্ব নিয়েছি। আমার স্থায়ী সবকিছু ছিল (আইসিসিতে), সেগুলো ছেড়ে দেশের জন্য এসেছি। যতদিন সম্ভব কাজ করব। ভবিষ্যতের ব্যাপারটা আমার হাতে নেই।’
আমিনুল ইসলাম বুলবুলই বারবার বিসিবিতে নির্বাচন করার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। অবশেষে তিনিও ঘোষণা দিলেন নির্বাচন করার।
বুলবুলের এই ঘোষণার সাথে সাথে একটি প্রশ্ন উঠেছে জোরেসোরে। তিনি কোথা থেকে নির্বাচন করবেন? বলে রাখা ভাল, বিসিবিতে নির্বাচনের ক্রাইটেরিয়া হলো তিনটি। এক ঢাকার ক্লাব, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা আর তিন হলো সার্ভিসেস, বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক ক্রিকেটারদের ভোটে। এই তিন ক্যাটাগরির মধ্যে বুলবুল কোন ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করবেন?
সে প্রশ্নটা এখন খুব বড় হয়ে উঠেছে। সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম বুলবুলের ঢাকার ক্লাব কোটায় নির্বাচন করার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কারণ, এখানে প্রিমিয়ার, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ এর ৭৬ ক্লাবের কাউন্সিলর মনোনয়ন একরকম চূড়ান্ত। বুলবুল যেহেতু আাইসিসির চাকুরির কারণে ঢাকা তথা দেশের ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন, তাই তার কোন ক্লাবের সম্পৃক্ততা নেই।
এই ক্লাব কাউন্সিলরশিপের পূর্ব শর্তই হলো সংশ্লিষ্ট ক্লাবের চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি কিংবা ক্রিকেট কমিটি চেয়ারম্যান না হয় ক্রিকেট সেক্রেটারি। এর বাইরে ক্রিকেট টিমের প্রধান ‘ডোনার’ হিসেবেও কেউ কেউ কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন। পাবেন।
বুলবুল সেখানে নেই। তার পরের ক্যাটাগরি হলো সার্ভিসেস, বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক ক্রিকেটারদের কোটায়। সেই ক্যাটাগরিতে ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবেরও ভোট আছে। যেহেতু পূর্ব সম্পৃক্ততা নেই, তাই সেই ক্যাটাগরি থেকেও বুলবুলের জিতে আসা খুব কঠিন হবে।
তাহলে কোন ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচন করবেন বুলবুল? একটি ক্যাটাগরিইে বাকি থাকলো, তাহলো জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা। ক্রিকেট পাড়ায় আজ মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেল থেকে একটি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাহলো, বুলবুল ঢাকা বিভাগ থেকে নির্বাচন করতে পারেন এবং ভেতরের খবর, ঢাকা বিভাগ কাউন্সিলর হবেন বুলবুল।
এমআই