সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফুলবাড়ীতে ধরলার ভাঙন থেকে চর গোরকমন্ডল রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

সোমবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫
ফুলবাড়ীতে ধরলার ভাঙন থেকে চর গোরকমন্ডল রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন

জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : 

"ভাঙন ঠেকাও, চর গোরকমন্ডল বাঁচাও"—এ স্লোগানকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর গোরকমন্ডলকে ধরলা নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষার দাবিতে এক বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টাব্যাপী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল এলাকায় ধরলার পাড়ে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে স্থানীয় ভাঙনকবলিত শত শত পরিবার ছাড়াও অগণিত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনের আয়োজন করে কুড়িগ্রাম জেলা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন পরিষদ।

স্থানীয়রা জানান, গত দেড় মাসে ধরলার ভাঙনে অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শত শত বিঘা আবাদি জমি। প্রতিদিনই নদী তার ভেতর গ্রাস করছে বসতভিটা, ক্ষেত-খামার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়। ফলে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো আশ্রয়হীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেক পরিবার পাশের গ্রাম ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।

চোখের সামনে এ ভাঙন দেখেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, কাগজে-কলমে প্রকল্প এলেও বাস্তবে কোনো টেকসই বাঁধ নির্মাণ হয়নি। এর ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন দেখা দেয় এবং হাজারো মানুষ গৃহহারা হয়ে পড়ে।

মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভাঙনকবলিত পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সালেকা বেওয়া ও আবু সিদ্দিক। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ইউনুছ আলী, সাংবাদিক আবু সাইয়িদ বাবু, এ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, সহকারী অধ্যাপক নাজমুন নাহার বিউটি, সাবেক স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শাহাদত হোসেন এবং কুড়িগ্রাম জেলা চর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বক্তব্য রাখেন।

তাদের বক্তব্যে উঠে আসে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ ও সরকারের কাছে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি।

সালেকা বেওয়া বলেন, "আমাদের ঘরবাড়ি, ফসলের জমি সব নদী ভেঙে নিয়ে গেছে। এখন আমরা খোলা আকাশের নিচে। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পুরো চর গোরকমন্ডল মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।"

আবু সিদ্দিক বলেন, "শত শত পরিবার রাস্তায় বসবাস করছে। বাচ্চাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের পুনর্বাসন ও নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ জরুরি।"

ইউনুছ আলী বলেন, "ধরলার ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই প্রকল্প হাতে নিতে হবে। নদী ভাঙন রোধ না করলে কেবল গোরকমন্ডল নয়, আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলও হুমকির মুখে পড়বে।"

অধ্যাপক নাজমুন নাহার বিউটি বলেন, "ভাঙনের কারণে মানুষ দিশেহারা। এভাবে ফসলি জমি আর বসতভিটা হারালে গ্রামীণ অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।"

অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, "দ্রুত নদী শাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে হাজারো মানুষ গৃহহীন হবে। আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন অচিরেই টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়।"

বক্তারা বলেন, ধরলার ভাঙন শুধু মানুষকে গৃহহারা করছে না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বাজার-ঘাটও হুমকির মুখে পড়ছে। তাই সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বাঁধ নির্মাণ এবং ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের দাবি জানান।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল