বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লিপুলেখ ও অযোধ্যা ইস্যুতেই পতন, দাবি সাবেক নেপালি প্রধানমন্ত্রীর

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫
লিপুলেখ ও অযোধ্যা ইস্যুতেই পতন, দাবি সাবেক নেপালি প্রধানমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

জেন-জির বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের পর নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বুধবার দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অভিযোগ করেন, লিপুলেখ সীমান্ত ও দেবতা রামের জন্মস্থান নিয়ে ভারতবিরোধী অবস্থান নেওয়ার কারণেই তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জেন-জির বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন কেপি শর্মা। গুঞ্জন ওঠে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে তিনি নেপালেই অবস্থান করছেন। তিনি সেনাবাহিনীর শিবপুরি ব্যারাকে আছেন।

বুধবার নিজ দলের মহাসচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে নিজের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর জন্য ভারতকে দায়ী করেছেন অলি।

তিনি বলেছেন, যদি আমি লিপুলেখ অঞ্চল নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম এবং অযোধ্যা ও দেবতা রাম নিয়ে কথা না বলতাম তাহলে আমি হয়ত ক্ষমতায় থাকতাম। আমি ক্ষমতা হারিয়েছি কারণ অযোধ্যতায় দেবতা রামের জন্ম হয়েছে এই দাবির বিরোধীতা করেছিলাম।

লিপুলেখ নিয়ে ভারত-নেপালের দ্বন্দ্ব

ভারত এবং নেপালের মধ্যে লিপুলেখ গিরিপথকে কেন্দ্র করে বিরোধ রয়েছে। এই বিতর্কের মূলে রয়েছে কালাপানি অঞ্চল। ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে এই অঞ্চলটির মাধ্যমে সীমান্ত নির্ধারিত হয়েছে। কালী নদীর উৎপত্তিস্থলকে নির্ধারণ করে সীমান্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

নেপালের দাবি হলো, কালী নদীর উৎপত্তি লিম্পিয়াধুড়া থেকে, যা লিপুলেখের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। তাদের দাবি এ অনুযায়ী, কালাপানি ও লিপুলেখ উভয়ই নেপালের ভূখণ্ড। অন্যদিকে, ভারতের দাবি নদীটি কালাপানি গ্রামের কাছে শুরু হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলটিকে নিজেদের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অংশ হিসেবে দাবি করে তারা।

নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির সরকার এ অঞ্চল নিয়ে কঠোর ছিল। অলি ঘোষণা দেন “মহাকালী নদীর পূর্ব দিকের লিম্পিয়াধুড়া, লিপুলেখ এবং কালাপানি নেপালের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

এই ঘোষণার পর ভারতকে ওই অঞ্চলে রাস্তা নির্মাণ এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিল নেপাল। এমনকি দেশটি চীনকে জানিয়েছিল এটি তাদের ভূখণ্ড। তবে ভারত নেপালের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, ১৯৫৪ সাল থেকে তারা লিপুলেখ দিয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য করছে।

অযোধ্যা ও দেবতা রামের জন্মস্থান নিয়ে প্রশ্ন

২০২০ সালের জুলাইয়ে কেপি শর্মা অলি বলেছিলেন, দেবতা রাম ভারতে নয় নেপালে জন্ম নিয়েছিলেন। তিনি মন্তব্য করেন, “রামের অযোধ্যা রাজ্য নেপালের পূর্ব বীরগঞ্জে অবস্থিত। ভারত আরেকটি ভুয়া অযোধ্যা তৈরি করেছে।”

তিনি ওই সময় বলেন, দেবতা রাম সীতাকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু ভারতে জন্ম নেওয়া রাম কীভাবে নেপালের জনকপুরের সীতাকে বিয়ে করেছিলেন।

প্রাচীন আমলে দূরের স্থানে বিয়ের প্রচলন ছিল না বলেও মন্তব্য করেন ওলি। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে ভুল ধারণা আছে সীতা ভারতের রামকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু রাম ভারতীয় নয় নেপালি ছিলেন।”

“রাম কীভাবে ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে নেপালের জনকপুরে সীতাকে বিয়ে করতে এসেছিলেন। প্রাচীন আমলে দূরের স্থানে বিয়ের প্রচলন ছিল না। ওই সময় কোনো ফোনও ছিল না। তাহলে তারা কীভাবে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রাচীন আমলে আশপাশের রাজ্যগুলোর মধ্যে বিয়ে হতো। এত দূর গিয়ে কেউ বিয়ে করত না।”- বলেন অলি।

এমন বক্তব্য দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ভারতে ব্যাপক সমালোচনা হয়।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

একে 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল