মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ ও চুনকুড়ি নদীর সংযোগ
স্থলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে হঠাৎ করে ভাঙন দেখা
দিয়েছে। গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের
হরিনগর সুইচ গেট সংলগ্ন মথুরাপুর গ্রামের ঋষি পাড়া এলাকায় এই ভাঙন
দেখা দেয়। দিন যত যাচ্ছে ভাঙন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সখোনে বসবাসকারি
চারটি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস
করছে।
এদিকে খবর পেয়ে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা
পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ভাঙন প্রতিরোধে দ্রত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে
সেখানে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে
নির্দেশ দিয়েছেন।
ভাঙন কবলিত এলাকার আবু বক্কার গাজী, নেসার আলী গাজী, হামিদা খাতুন ও
বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। নদীতে জাল
ধরে মাছ,কাঁকড়া মেরে আমাদের সংসার চলে। গত রোববার গভীর রাতে হটাৎ করে
আমাদের ঘরের মাঝখান দিয়ে ফাটল ধরে নদীতে নেমে যাচ্ছে, কিন্তু ৪/৫ দিয়ে এক
ফুটের বেশি জায়গায় জুড়ে ফাঁকা হয়ে মাটি সরে গেছে। খুব ভয়ে আছি কখন
কি হয়। তাই ঘর দোর খুলে ফেলে এখন রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নিচে বসবাস
করছি। আমাদের অন্য কোথাও জায়গা জমি নেই যে সেখানে গিয়ে বসবাস
করবো।
স্থানীয়রা বলেন, দ্রæত সময়ের মধ্যে বাঁশের খাঁচা তৈরি করে এখানে ফেললে পলি
জমে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে।
সামনে বড় গোন (জোয়ার) আসছে। সেময় নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে সাথে
বৃষ্টিও হতে পারে। আর বৃষ্টি হলে যেখান থেকে ফাটল শুরু হয়েছে সব একবারে
নদীতে নেমে যাবে। এখানে সুইচ গেটের পানি বের হওয়ার কারণে ঘোল পড়ে, যার
ফলে নদীর চরের মাটি সরে গেছে। এই অবস্থায় দ্রæত ব্যবস্থা না নিলে নদীর প্রবল
স্রোতে ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, মিঠা পানির পুকুর,
রাস্তাঘাটসহ এলকার বিভিন্ন অবকাঠামো।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম
বলেন, আমি মেম্বর পাঠিয়ে খবর নিচ্ছি এখন কি অবস্থা। তারপর দ্রæত সংস্কারের
জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলব।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এসও) প্রিন্সি রেজা বলেন, ভাঙনস্থল
পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু
করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্র্ডের দায়িত্বে থাকা এসওকে দ্রæত ব্যবস্থা
গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি পরিবারকে আপততো বসবাসের জন্য
একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে একটি জায়গা দেখে তাদের স্থানান্তর করা
হবে। তিনি এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান।
একে