নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের প্রায় সব অঞ্চলে গত কয়েক দিন ধরেই ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এই ভারী বৃষ্টিতে বাড়তে শুরু করেছে নদীর পানি। এর প্রভাবে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুই নদীর তিন স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বৃষ্টি কমে এলে পানিও কমে আসবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের দেওয়া বুধবার সন্ধ্যার তথ্য অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৩টি স্টেশনে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট (সিলেট) পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ (সিলেট) পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ফেঞ্চুগঞ্জ (সিলেট) পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু স্থানে এবং উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে ভারী থেকে অতি-ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় (১৭ সেপ্টেম্বর ৯টা থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ৯টা পর্যন্ত) দেশের রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারতের মেঘালয়, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, বিহার ও ত্রিপুরা প্রদেশে মাঝারি-ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সতর্ক বার্তায় বলা হয়, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টা স্থিতিশীল থেকে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এ সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার নিম্নাঞ্চলে বিরাজমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে পরবর্তী ২ দিনে পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে তিস্তা ও দুধকুমার নদী বিপদসীমা অতিক্রম এবং ধরলা নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তবে পানি সমতল দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে হ্রাস পেতে পারে।
সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সোমেশ্বরী, সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ভুগাই, কংস ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি সমতল আগামী একদিনে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলায় সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। তবে দ্বিতীয় দিনে পানি স্থিতিশীল এবং তৃতীয় দিনে হ্রাস পেতে পারে।
প্রধান অববাহিকা
ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি সমতল আগামী ৫ দিন বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। গঙ্গার পানি সমতল ২ দিন স্থিতিশীল ও পরবর্তী ৩ দিন হ্রাস পেতে পারে। অপরদিকে পদ্মা নদীর পানি সমতল আগামী ৫ দিন বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।
অন্যান্য অববাহিকা
রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মহানন্দা, করতোয়া, ঘাঘট, আত্রাই, যমুনেশ্বরি, আপার আত্রাই, আপার করতোয়া, পুনর্ভবা ও টাঙ্গন নদীর পানি সমতল আগামী এক দিন বৃদ্ধি, এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে স্থিতিশীল থাকতে পারে।