আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শারদীয় দুর্গোৎসবের সময়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পশ্চিবঙ্গের কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকা। সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি মঙ্গলবার সকালেও অব্যাহত রয়েছে। মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে অঞ্চলটিতে।
রাতভর টানা ভারী বৃষ্টিতে শহর কার্যত পানিবন্দি। ফলে রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কলকাতা, সল্টলেক, হাওড়া এবং লাগোয়া এলাকায় বানভাসি পরিস্থিতি। নিচু এলাকাগুলোতে পানি ঢুকে ভোগান্তি আরও চরমে পৌঁছেছে। কলকাতা পৌরসভা জানিয়েছে, শহরের পরিস্থিতি পুনরায় ‘স্বাভাবিক’ হতে সময় লাগবে।
এরই মধ্যে শহরে একাধিক মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাতজন নিহত হয়েছেন। নেতাজিনগর, কালিকাপুর, বালিগঞ্জ এবং বেনিয়াপুকুরে এসব মর্মান্তিক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। মরদেহ উদ্ধার ও নিরাপত্তার জন্য ওই এলাকায় সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয় বিদ্যুৎ সংযোগও।
ভারী বৃষ্টিতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। ভোগান্তি পাতালপথেও। ব্যাপক বৃষ্টির জেরে ব্যাহত হচ্ছে কলকাতার মেট্রো পরিষেবা। ব্লু লাইনে ময়দান থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন থেকে মেট্রো পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। ফলে মেট্রো পথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দক্ষিণ কলকাতা।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের জেরেই এই প্রবল বৃষ্টি। আজ সারাদিনও বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। ফলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগর সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫.৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং একই জায়গায় অবস্থান করছে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঘূর্ণাবর্তটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবীদরা।
কলকাতায় সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কামডহরিতে (গড়িয়া), যার পরিমাণ ছিল ৩৩২ মিলিমিটার। এরপর যথাক্রমে রয়েছে-যোধপুর পার্ক (২৮৫ মিমি), কালিঘাট (২৮০.২ মিমি) তপসিয়া (২৭৫ মিমি), বালিগঞ্জ (২৬৪ মিমি), চেতলা (২৬২ মিমি), চিংড়িহাটা (২৩৭ মিমি), মোমিনপুর (২৩৪ মিমি), পামার বাজার (২১৭ মিমি), ধাপা (২১২ মিমি), সিপিটি ক্যানেল (২০৯.৪ মিমি), উল্টোডাঙ্গা (২০৭ মিমি), কুদঘাট (২০৩.৪ মিমি), পাগলাডাঙ্গা (২০১ মিমি), কুলিয়া (১৯৬ মিমি) ও ঠনঠনিয়া (১৯৫ মিমি)।
একে