নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ এতই শক্তিশালী যে, পৃথিবীর যেকোনো আদালত তার সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সমাপনী যুক্তিতর্কে এসব কথা বলেন তিনি।
হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ স্বচ্ছ মন্তব্য করেন মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনাসহ আসামিদের শাস্তি দিতে না পারলে শহীদ ও আহতদের প্রতি অবিচার করা হবে।
সমাপনী যুক্তিতর্কে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি চান।
তিনি বলেন, ‘এত অপরাধের পরও শেখ হাসিনার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। উল্টো মামলাকারীদের নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দিচ্ছেন। সেনাবাহিনীকে বিভিন্নভাবে উস্কানি দিচ্ছেন। তবে দেশপ্রেমিক সেনাবহিনী এই ফাঁদে পা দেয়নি। পলাতক থেকে শেখ হাসিনা দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর চেষ্টা করছে।’
এদিকে জুলাই-আগস্টে সংগঠটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শেষ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কবে রায় ঘোষণা হবে ১৩ নভেম্বর তা জানাবে ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার কাজ শেষ হয়।
হাসিনা ছাড়া অন্য যাদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে তারা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করে ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তী সময়ে মামলাটির রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন পুলিশের আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
এমআই