তালুকদার হাম্মাদ, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কম্পাস-২৫ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এটি শুরু হয়। এর আয়োজন করে আইইইই কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ।
প্রথমদিন সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এসময় পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইইইই সিএস বিডিসি'র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামীম কায়সার ও প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেনারেল চেয়ার হিসেবে আই ইইই সিএস বিডিসি চেয়ার অধ্যাপক ড. কে. এম. আজহারুল হাসান ও পাস্ট চেয়ার অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব তারেক, টিপিসি চেয়ার হিসেবে আই ইইই এস বিডিসি ইলেক্ট চেয়ার অধ্যাপক ড. ওবাইদুর রহমান ও আই ইইই বাংলাদেশ সেকশন পাস্ট চেয়ার অধ্যাপক ড. এম. মহসিনুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন সৈকত ও মারুফা ইয়াসমিন মিশুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স সেক্রেটারি তাবিল আহাম্মেদ। সম্মেলনে প্রধান আলোচক ছিলেন, পাকিস্তানের ইন্সটিটিউট অব বিজনেস ম্যানেজমেন্টের রেক্টর তারিক রহিম সম্রো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম বলেন, "COMPAS 2025 ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক ঐতিহাসিক আয়োজন। এটি আমাদের সকলের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, আমরা এই স্তরের একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বব্যাপী গবেষণা সম্প্রদায়ের অংশ হতে দেখে আমরা সত্যিই গর্বিত। আমি আশা করি এই সম্মেলন জ্ঞান ভাগাভাগি, সংযোগ তৈরি এবং উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হবে। এই অনুষ্ঠানটি সহযোগিতা এবং ভবিষ্যতের গবেষণার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করুক যা সমাজের উপকার করবে।
আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার সাইন্স সংশ্লিষ্ট যে বিষয় গুলো দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে সেগুলোতে দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য এধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে গবেষণা কার্যক্রম এত গুরুত্বপূর্ণ কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অত্যন্ত অগ্রসর এবং পরবর্তীতে সব ধরণের কাজ মেশিন দ্বারাই পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে-বিদেশে এ বিষয় গুলোতে যারা দক্ষ তাদের সান্নিধ্যে এসে আরো গভীর ভাবে জানার জন্য এই কনফারেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই আয়োজনে দেশবিদেশের যারা অংশগ্রহণ করেছেন এবং যারা উদীয়মান গবেষক আছেন তারা আরও অনুপ্রাণিত হবেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে পাল্লা দিতে যে দক্ষতা গুলো প্রয়োজন সেগুলোই আসবে এ ধরনের বিভিন্ন কোর্স, ডিগ্রী এবং কনফারেন্সের মতো জায়গা থেকে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ আয়োজকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের বিষয় যে, এ বছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন পরিসরে একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এই সম্মেলনটি আমাদের একাডেমিক যাত্রায় একটি মাইলফলক, যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গবেষণা, উদ্ভাবন এবং বৈশ্বিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিবে।
তিনি আরও বলেন, এই সম্মেলন শুধুমাত্র আমাদের একাডেমিক আদান-প্রদানকে উৎসাহিত করবে না, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং শিক্ষাবিদদের সাথে আমাদের সহযোগিতামূলক কার্যক্রম ও গবেষণাকে শক্তিশালী করার একটি পথ তৈরি করবে।
এই সম্মেলনটি একাডেমিক এবং গবেষণা উৎকর্ষের পথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক যাত্রার একটি ঐতিহাসিক অংশ হয়ে থাকবে।
জানা যায়, সম্মেলনে বিশ্বের ২৬টি দেশের গবেষক ও শিক্ষাবিদরা অংশগ্রহণ করবে। ৭৯০টি গবেষণা প্রবন্ধ কঠোর রিভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপনার জন্য ২৬৪টি প্রবন্ধ গৃহীত হয়েছে। যা এক্সেপটেড এন্ড প্রেজেন্টেড গবেষণা পেপার স্কোপাস ইন্ডেক্সড (Scopus Indexed), IEEE Digital Library তে প্রকাশ করা হবে। সেশনটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, ডেটা অ্যানালিটিক্স, কম্পিউটার ভিশন, অ্যালগরিদম ও কম্পিউটেশনসহ তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন অতিথিরা।
এমআই