তালুকদার হাম্মাদ, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৮০ এর ধারা ৪১ অনুযায়ী এই গঠনতন্ত্র পাস হয়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দরাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি নুর আলম বলেন, ‘গতকাল সিন্ডিকেটে গঠনতন্ত্র পাশ হয়েছে এটা আশার দিক। আমরা চাই, অন্যান্য যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে, শীঘ্রই এগুলো শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ইকসু বাস্তবায়ন হোক।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ইবি শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর থেকেই আমরা ইকসুর দাবি করে আসছিলাম। কারন জবাবদিহিতা, শিক্ষার্থীদের অধিকার, একাধিপত্য দূরীকরণ এবং সুন্দর ক্যাম্পাস বিনির্মানের জন্য ছাত্র সংসদের বিকল্প নেই। সিন্ডিকেটে গঠনতন্ত্র পাস হয়েছে। এটাকে আমরা অবশ্যই এপ্রেশিয়েট করি। তবে শুধু এতটুকু করে বসে থাকলে চলবে না। প্রশাসন পরবর্তী কতদিনের মধ্যে বাকি কার্যক্রম শেষ করে নির্বাচন দিবে তার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’
শাখা শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম হচ্ছে ছাত্র সংসদ। আমরা গনঅভ্যুত্থানের পর থেকে ছাত্র সংসদ গঠনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলাম। প্রশাসন দেরিতে হলেও অবশেষে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করেছে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা প্রশাসনকে বলবো শুধু ইউজিসিতে পাঠালেই চলবে না, সবসময় যোগাযোগ রেখে, চাপে রেখে দ্রুত অনুমোদন নিয়ে আসতে হবে। এবং গঠনতন্ত্র অনুমোদন হওয়ার পর খুব শীঘ্রই স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য নুর উদ্দিন বলেন, ‘১৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ইকসু) নির্বাচন। আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে ইকসুর একটি গঠনতন্ত্র সিন্ডিকেটে পাস করেছে। এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক উদ্যোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনা ও মতবিনিময় না করেই গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করায় নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনার্স-মাস্টার্সের রেজাল্ট না হওয়া রানিং শিক্ষার্থীদের নিয়েই ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি জানালেও গঠনতন্ত্র প্রণয়নে এসব বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে কি-না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি— সকল শিক্ষার্থীর মতামত ও দাবি বিবেচনায় নিয়ে একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও আধুনিক গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সমন্বয়ক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা লড়াই করে আসছি। ধন্যবাদ জানাই দেরিতে হলেও গঠনতন্ত্রটি সিন্ডিকেটে পাশ জরার জন্য। আশা করব গঠনতন্ত্র তৈরির মতো ধীরগতিতে যেন ইউজিসিতে না যায়।নভেম্বরের মধ্যে যেন ইকসু নির্বাচন বাস্তবায়ন করা যায় ঠিক সেই সময়ের মধ্যে গঠনতন্ত্রটি পাশ হয়ে আসুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
এমআই
