মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় সদ্য শেষ হওয়া আন্তঃ কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টকে ঘিরে জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. কামরুজ্জামনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া অফিস যৌথভাবে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। একইভাবে আন্তঃ স্কুল ও মাদ্রাসা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত টেবিল টেনিস, দাবা ও সাতার প্রতিযোগিতার বরাদ্দের টাকাও বন্টনের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে গত ২৪ হতে ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃ কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫। জেলার ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলোয়াড়দের জেলা স্টেডিয়ামে যাতায়াত খরচ ও পুরুস্কারের অর্থসহ টুর্নামেন্টের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এই বরাদ্দ থেকে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে আসা-যাওয়ার জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. কামরুজ্জামান সদর উপজেলায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে দিয়েছেন ২ হাজার এবং দূরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে দিয়েছেন ৩ হাজার টাকা করে। টুর্নামেন্টে মোট ১২টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে অনুযায়ি ক্রিড়া অফিসার এই বরাদ্দ থেকে কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
একইভাবে সাতক্ষীরা জেলায় আন্তঃ স্কুল ও মাদ্রাসা পর্যায়ে টেবিল টেনিস, দাবা ও সাতার প্রতিযোগিতার জন্য বরাদ্দ ছিল ৮৮ হাজার টাকা। জেলার মাত্র সাতটি প্রতিষ্ঠান এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে। সব মিলে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকার পুরুষ্কার ও প্রতিষ্ঠান প্রতি ৫শ’ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিযোগিতা থকে প্রায় অর্ধেকের বেশি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাতক্ষীরা ভালুকা চাঁদপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ এ,আর,এম মোবাশ্বেরুল হক জ্যোতি জানান, তার কলেজের একটি টিম আন্তঃ কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করে। আমরা মোট চারটি খেলায় অংশ গ্রহণ করে রানার্স আপ হই। প্রথম তিনটি খেলায় আমাদের যাতায়াত খরচ বাবদ দুই হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছি। কিন্তু চতুর্থ (ফাইনাল) খেলার জন্য আমাদের কোন খরচ দেওয়া হয়নি। তবে টুর্নামেন্টে রানার্স আপ হওয়ায় আমাদেরকে ২৫ হাজার টাকা পুরুস্কার দেওয়া হয়েছিল।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের টিম ম্যানেজার মো, আছাদুল হক জানান, আমরা ফাইনাল সহ টুর্নামেন্টের চারটি খেলায় অংশ গ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হই। কিন্তু আমাদের তিনটি খেলার জন্য ২ হাজার করে মোট ছয় হাজার টাকা খরচ দেওয়া হয়েছিল। ফাইনাল ম্যানের জন্য কোন খরচের টাকা পায়নি, শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়নের জন্য প্রাইজমানি পেয়েছিলাম ৩৫ হাজার টাকা। খরচের টাকার বিষয় জানতে চাইলে ক্রীড়া অফিসার জানান, ফাইনালের খরচ পুরুষ্কারের ৩৫ হাজারের সাথে সংযুক্ত।
একই অভিযোগ করেছেন, কালিগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান ও তালা মুক্তিযোদ্ধা কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল ইসলাম। তারা বলেন, টুর্নামেন্টের প্রতিটি খেলায় অংশ গ্রহণের জন্য খরচ বাবদ আমাদরেকে ৩ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। শুনেছি খরচ বাবদ ৫ হাজার করে টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা তা পায়নি।
এবিষয় সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া অফিসার মো, কামরুজ্জামান জানান, ভ্যাট ট্রাক্স বাদ দিয়ে প্রতিটি দল ৪ হাজার ৮শ ’ টাকা করে পাবে। তবে আনুসাঙ্গিক খরচ বাদে দূরত্ব অনুযায়ি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার, আড়াই হাজার ও তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
তবে আন্তঃ স্কুল ও মাদ্রাসা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত টেবিল টেনিস, দাবা ও সাতার প্রতিযোগিতার বরাদ্দের টাকা বন্টনের বিষয় তিনি খাতাপত্র না দেখে বলতে পারবেন না বলে জানান। তিনি সময় চেয়ে এই প্রতিবেদককে অফিসে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
একে