নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বা মেট্রোরেলের নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অবিলম্বে স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি-বিধিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন কর্মচারীরা। আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি বিধিবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কথিত ‘বিশেষ বিধান’ বাতিল করে এই বিধিমালা প্রকাশ না করা হলে ১০ ডিসেম্বর থেকে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ডিএমটিসিএল-এর ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
তারা বলেন, ২০১৩ সালে ডিএমটিসিএল প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও ৯০০-র বেশি নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য এখনো কোনো স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা তৈরি হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে কর্মীরা দিন-রাত সেবা দিয়ে যাচ্ছন। কিন্তু চাকরি-বিধিমালা না থাকায় তারা ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট-অ্যালাউন্স, গ্রুপ-ইন্স্যুরেন্সসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা এবং পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অতীতে এক সহকর্মীর মৃত্যুর পরও সরকারিভাবে কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদান করা সম্ভব হয়নি কেবল এই বিধিমালার অভাবে।
কর্মচারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানোর পর একটি খসড়া চাকরি-বিধিমালা প্রস্তুত করা হলেও সেখানে একটি বিতর্কিত ‘বিশেষ বিধান’ যুক্ত করা হয়েছে। এই বিধানের মাধ্যমে এমআরটি লাইন-৬ ও অন্যান্য প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ী করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সুপ্রিম কোর্টের রায় ও দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। এই অবৈধ বিধান বলবৎ রাখার অপচেষ্টার কারণেই গত ১৩ বছরেও বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি বলে দাবি করেন তারা।
আরও উল্লেখ করা হয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নির্দেশনায় ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে বিধিমালা প্রণয়নের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এর প্রতিবাদে গত ফেব্রুয়ারিতে কর্মচারীরা আন্দোলনে নামলে কর্তৃপক্ষ এক মাসের মধ্যে বিধিমালা প্রণয়নের আশ্বাস দেয়। কিন্তু দীর্ঘ ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও সেই আশ্বাস পূরণ করা হয়নি।
অবস্থান কর্মসূচিতে ডিএমটিসিএল-এর পরিচালক (প্রশাসন) উপস্থিত হয়ে আশ্বাস দেন যে, আগামী ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বোর্ড মিটিংয়ে তিনি ‘বিশেষ বিধান’ অপসারণপূর্বক সার্ভিস রুল প্রণয়ন ও প্রকাশের বিষয়টি উপস্থাপন করবেন।
এসময় কর্মচারীরা জানিয়ে দেন, আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে বিতর্কিত বিধান বাদ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশ করা না হলে ১০ ডিসেম্বর থেকে সকল নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।
একে