নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইলেকশন ওয়ার্কিং অ্যালায়েন্সের (ইডব্লিউএ) আত্মপ্রকাশ ও গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অবাধ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পর্যবেক্ষক সংস্থা ও নাগরিক সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে “জাতীয় নির্বাচন ২০২৬: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক ও ইডব্লিউএ’র আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যালায়েন্সের কো-চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া সংগঠনের লক্ষ্য তুলে ধরে বলেন, শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়—এতে সকল অংশীজনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি দেশে জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অ্যালায়েন্স কাজ করবে বলেও তিনি জানান।
গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সরকারের সাবেক সচিব প্রফেসর ড. মো. শরিফুল আলম। অবস্থানপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. শাফিউল ইসলাম। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে এবারের জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক ঐক্য এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও তিনি মত দেন। তিনি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি জোরদার, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতকেও জরুরি বলে উল্লেখ করেন।
বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের মানদণ্ড অনুসারে নির্বাচন আয়োজন জরুরি। তিনি সংখ্যালঘু ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন।
জামায়াত নেতৃত্বাধীন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অপরিহার্য। সব কেন্দ্রে সিসিটিভি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অর্থের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বদলিতে লটারি ব্যবস্থার প্রস্তাবও তুলে ধরেন।
অবস্থানপত্রে প্রফেসর মো. শাফিউল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সংস্কারে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ২০২৬ সালের নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পরিণত করেছে। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে আয়োজনও একটি বড় রাজনৈতিক বাস্তবতা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অন্যান্য বক্তারা স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, নির্বাচনী সন্ত্রাস ও কালো টাকার প্রভাব রোধ, সব কেন্দ্রে সিসিটিভি ও বডিক্যামের ব্যবহার, এবং কার্যকর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ওপর জোর দেন।
বক্তারা নবগঠিত ইলেকশন ওয়ার্কিং অ্যালায়েন্সকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
একে