নিজস্ব প্রতিবেদক:
উইমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওয়েব) নাসরীন ফাতেমা আউয়াল বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের অর্থনীতি, নীতি এবং ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তাদের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে নারীরা—যারা স্থানীয় অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান, উদ্ভাবন ও সামাজিক স্থিতিশীলতার নেতৃত্ব দেন—তারা ঝুঁকির পাশাপাশি সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন।
শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) গুলশানের লেকশোর হোটেলে ওয়েব আয়োজিত 'ভয়েসেস ফর চেঞ্জ: পুটিং ক্লাইমেট অ্যাকশন, ওমেন এন্ট্রেপ্রেনিউরস, এন্ড এসএমই ইন বাংলাদেশ’স পাবলিক পলিসি'-শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আমরা চাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা, নারী উদ্যোক্তা তৈরির গতি বাড়ানো উল্লেখ করে নাসরীন আউয়াল বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হলো আমাদের স্লোগানকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া। আমরা চাই, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা, নারী উদ্যোক্তা তৈরির গতি বাড়ানো এবং ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তাদের জাতীয় নীতি-আলোচনায় আরও প্রাধান্য দেওয়া।জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নারীদের ভূমিকা তুলে ধরা, নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা–সমাধান জননীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা, এবং বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলোকে (এসএমইস) আরও শক্তিশালী করা।কারণ আমরা বিশ্বাস করি—নারী উন্নয়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ওয়েব সবসময়ই নারীদের পাশে ছিল এবং থাকবে—প্রশিক্ষণ, বাজার-সংযোগ, পরামর্শ এবং সহযোগিতার মাধ্যমে। আমাদের লক্ষ্য হলো যেন প্রতিটি নারী নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে পারেন।
ওয়েব সভাপতি বলেন, আমরা আশা করি আজকের আলোচনা বাস্তব সমাধান, নীতিগত সুপারিশ এবং সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করবে—যা বাংলাদেশকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জলবায়ু সহনশীল অর্থনীতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বক্তা ও অংশগ্রহণকারীদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ, কারণ আপনাদের চিন্তা–উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা আজকের নীতিগত সংলাপকে সমৃদ্ধ করছে।
শেষে আমি বাংলাদেশে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
তিনি যেন বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে উন্নয়নের কাজে আবারও অবদান রাখতে পারেন—এই প্রার্থনা করি।
উইমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওয়েব) দিনব্যাপী এই আয়োজনে সকাল ১০ টায় উদ্বোধনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে উদ্ভোদনী বক্তব্য প্রদান করেন ওয়েব সভাপতি নাসরীন ফাতেমা আউয়াল, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফারিদা আখতার, উপদেষ্টা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাইবা জারিনা, ডেপুটি হেড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেট বাংলাদেশ, মোঃ মুশফিকুর রহমান, চেয়ারপারসন, এসএমই ফাউন্ডেশন, মীর নাসির হোসাইন, সাবেক সভাপতি এফবিসিসিআই এবং মো. রফিকুল ইসলাম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন আবদুন নাসের খান, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল পিএলসি।
দিনব্যাপী এই উচ্চপর্যায়ের সেমিনারে নীতি নির্ধারক, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং নারী উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করবেন। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ, এসএমই খাতের শক্তি বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কার্যকর দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়।
দুইটি টেকনিক্যাল সেশনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, সারা হোসেন, সিনিয়র এডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট, আবদুল হাই সরকার, চেয়ারম্যান, ঢাকা ব্যাংক, মাহিউল কাদির, কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বেটার উইথ ওয়াটার ইন বাংলাদেশ, শেখ মুহাম্মদ মেহেদি আহসান, জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্লানার্স, ফারাহ কবির, কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাকশন এইড, বাংলাদেশ, হুরায়রা জাবীন, কনসালটেন্ট, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং হাসনা জসিমউদদীন মউদুদ, আইইউসিএন কাউন্সিলর, সাউথ এন্ড ইস্ট এশিয়া।
এমআই