লঅ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় বাবার সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে দাফনকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সন্তানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির মুখে বাবার লাশ উঠানে রেখে পালিয়ে যান পরের সংসারের একমাত্র ছেলে সোহেল। ২৯ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত রুহুল আমিনের বাড়িতে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চরলরেন্স ইউনিয়নের বাসিন্দা রুহুল আমিন দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সোমবার ভোররাতে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই স্ত্রী ও একাধিক সন্তান রেখে যান। জীবদ্দশায় প্রথম স্ত্রী বিবি হনুফাকে রেখে তিনি রিজিয়াকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রুহুল আমিনের। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় ছয় একর জমিসহ তার বিপুল সম্পত্তি দ্বিতীয় স্ত্রী রিজিয়া ও তার সন্তানদের সঙ্গে ভোগ করতেন তিনি।
পরবর্তীতে রুহুল আমিনের সব সম্পত্তি বিভিন্ন কৌশলে রিজিয়ার ছেলে সোহেল নিজের দখলে নেন বলে অভিযোগ করেন প্রথম সংসারের সন্তানরা। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রথম সংসারের মেয়ে মোফাশ্বেরা বেগম, নাসিমা আক্তার ও ছেলে শরীফসহ পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে এসে সম্পত্তির হিসাব দাবি করেন। এ সময় সোহেল তাদের হুমকি দিয়ে বাড়ি ছাড়তে বলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে সোহেলের কাছে বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তির হিসাব চাইলে তিনি কোনো হিসাব দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বাবার মরদেহ উঠানে রেখেই সোহেল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এতে দাফন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল বলেন, “আমার বাবার কোনো সম্পত্তি আমার কাছে নেই। তারা যদি লাশ দাফন করতে না দেয়, তাতেও আমার কোনো আপত্তি নেই।”
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, সিদ্দিক উল্যা ও শরীফ জানান, রুহুল আমিনের অনেক সম্পত্তি ছিল। প্রথম সংসারের সন্তানদের কিছুই না দিয়ে সব সম্পত্তি সোহেল দখল করে রেখেছে। এমনকি কয়েকজনের কাছে জমি বিক্রি করে টাকা নিলেও এখনো রেজিস্ট্রেশন করে দেয়নি।
চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, “একজন মানুষ মৃত্যুর পর দাফনে বাধার কথা শুনে ঘটনাস্থলে যাই। দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছে। সোহেল আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি।”
এ বিষয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। আগে মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করার জন্য উভয় পক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এমআই