শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আমার প্রিয় দুই শিক্ষক

বুধবার, অক্টোবর ৫, ২০২২
আমার প্রিয় দুই শিক্ষক

রিমা সুলতানা:

আজ ৫ই অক্টোবর, শিক্ষক দিবস।এই দিবসে আমর সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় দুজন শিক্ষককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালোবাসা। প্রথমত আমার মাধ্যমিকের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক উত্তম বাবু স্যার আর দ্বিতীয়ত আমার অর্নাসের সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের লেকচারার মনিকা রানী ম্যাম।

আমার মাধ্যমিকের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক উত্তম বাবু স্যার ছিলেন অসাধারণ একজন শিক্ষক। উনি আমার গৃহশিক্ষকও ছিলেন।উনি আমাকে তার সেরা শিক্ষাটাই দান করেছেন। স্যার আমার গৃহশিক্ষক হলেও ক্লাসে কখনোই অন্যদের সাথে বৈষম্য করেননি।অন্য ৮/১০টা স্টুডেন্টকে যেভাবে কোনো কিছুর জন্য শাস্তি দিয়েছেন ঠিক তেমনি আমাকেও সমান ভাবে শাস্তি দিয়েছেন। আমি কখনো বৈষম্য দেখিনি,যা ছিল স্যারের এক অন্যতম গুন।আমি,আমার ছোট ভাই আর আমার বান্ধবী জান্নাত একই সাথে স্যারের কাছে পড়তাম।স্যার আমার আর জান্নাতের মাঝেও বৈষম্য করেননি।কে কম টাকা দিত,কে বেশি টাকা দিত তা কখনোই সয়ার ডিভাইড করে পড়াননি।শিখানোর সময় স্যার দুজনকেই সমান ভাবে শিখিয়েছেন।যখন কোনো প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান হতো স্যার আমাকে না বলেই আমার নাম দিয়ে দিতেন।বাড়িতে এসে বলতেন তোর নাম দিয়েছি,তুই অংশগ্রহণ করবি।আমি যদি বলতাম আমি পারবো না,স্যার বলতেন অবশ্যই পারবি,আর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাই মেইন, পুরস্কার পাওয়া মেইন না,তোর  অভিজ্ঞতা হবে।এমন  অনেকক দিন স্যার রাত ৮/৯টায় বাসায় গেছে সাইকেল চালিয়ে সেই ৩-৪মাইল পথ।আমি পুরস্কার পাওয়া নিয়ে স্যার ভাবতেন না, একমাত্র আমাকে প্রতিযোগিতার জন্য একজন শক্তিশালী প্রতিযোগি হিসাবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন।স্যার সবসময়ই বলতেন আমি চাই তুই যেন জীবনের সব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারিস।এতে কি ফেলি তা বড় না,অংশগ্রহণ করাটাই বড় আর  বড় অভিজ্ঞতা অর্জন করাটা।আমাদের মাদ্রাসায় টিফিন সময়ে মেয়েদের জন্য সিকিউরিটি ছিল,মেয়েরা বাহির হতে পারতো না মাদ্রাসা এরিয়া থাকে,তবে মেয়েদের খাবারের জন্য ছোট একটা দোকান আসতো,,স্যার প্রতিদিন প্রিন্সিপাল হুজুরের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে  আমাদের কে দুপুরের খাবারের জন্য বাড়িতে পাঠাতেন,কারন আমাদের বাড়ির পাশেই মাদ্রাসা ছিল। অষ্টম শ্রেনিতে থাকাকালীন একদিন ঝুম বৃষ্টিতে স্যার একভবন থেকে অন্য ভবনে এসে আমাকে ৫০টাকা দিলেন,বললেন কিছু খেয়ে নিতে,আরো ১০ টাকা দিয়েও বললেন তুই নিচ থেকে কিছু  খেয়ে হয়।সেই দিন স্যারের কাছে পিতৃ স্নেহ পেয়েছি।স্যার ছিলেন অনেকক সার্পোটিভ,অনেকক অনুপ্রেরণা দায়ক।জীবন নিয়ে অনেকক কিছু  বলতেন,আর সেই সাথেও বলতেন যত বড় হবি ততই বুজবি।আসলেই স্যারের সেই কথাগুলো আজ বুজতেছি।জীবনে যখন ফাস্ট বোর্ড এক্সামের মুখোমুখি হলাম তখন খুব পেয়েছিলাম,স্যার বলতো,ভয় নেই,তুই পারবি,প্রশ্ন কমন থাকবে।আমি তোদের দেখতে যাবো।জেএসসি, এসএসসি প্রতিটি এক্সামের সময় স্যার সকালবেলা আমাদের দেখে যেতেন।এক্সাম শেষ হলে আম্মাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করতেন,এক্সাম কেমন হয়েছে। পড়াশুনার গুরুত্ব বুজতে পেরেছি এই স্যারেরে হাত ধরেই।স্যার আলোর পথ দেখিয়েছেন। মজা বিষয় হচ্ছে কখনো পড়া না পারলে স্যার বলতেন কুমড়া,দূর্বাঘাস খা এইবার থেকে। তখন মন খারাপ হলেও এখন ঠিকই হাসি পায়। স্যারের অবদান কখনোই ভুলার মত না। আর এভাবেই স্যার একজন আদর্শ শিক্ষকের স্থান দখল করে আছেন।

দ্বিতীয়ত,আমার অনার্স জীবনে মনিকা ম্যাম।তিনি আমাকে খুব ভালোবাসেন,ম্যাম দেখলে খুব খুশি হন,খুশিতে জড়িয়ে ধরেন।আমি সবসময় ম্যামকে ফলো করি। ফাইনাল ইয়ারে ভাইবা শেষে ম্যাম দেখেই জড়িয়ে ধরে বললেন আমার প্রিয় ছাত্রী, তার সাথে পিক তুলতে হবে। ম্যামের সাথে হতাশা শেয়ার করলে খুব সুন্দর করে সার্পোট দেন। 

মনিকা ম্যাম আর উত্তম বাবু স্যারের সাথে খুব সুন্দর মিল আছে,ম্যাম নাড়ু খাওয়ার জন্য দাওয়াত দিয়েছেন আর স্যারও নাড়ু নিয়ে আসতেন। এই পর্যন্ত অনেকক ভালো শিক্ষকের সংস্পর্শ পেয়েছি। সার্পোটও পেয়েছি তারওপর এই এই আদর্শ দুজন শিক্ষককেও পেয়েছি।  এই শিক্ষক দিবসে উনাদের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর সেই সাথে সৃষ্টিকর্তা যেন আমাকে সেই রকম হওয়ার তৌফিক দান করে  যাতে উনার আমাকে নিয়ে গর্ববোধ করতে পারে।

আল্লাহ যেন সবসময়  উনাদের ভালো রাখেন,সুস্থ থাকে, আমিন।

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল