শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ওয়েটার থেকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী সুনাক

সোমবার, অক্টোবর ২৪, ২০২২
ওয়েটার থেকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী সুনাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

প্রতিদ্বন্দ্বীরা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌড় থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ঋষি সুনাক। ব্রিটেনের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম এক অস্থিতিশীল সময়ে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তিনি। 

বরিস জনসনের পর কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে শেষ প্রার্থী হিসাবে পেনি মর্ডান্ট নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ব্রিটেনের ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডি পার্টির পরবর্তী নেতা এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঋষি সুনাককে নিশ্চিত করেছেন।

ঋষি সুনাকের সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক

বয়স: ৪২ বছর 

জন্মস্থান : সাউদাম্পটন

বাড়ি: লন্ডন ও ইয়র্কশায়ার

শিক্ষা: উইনচেষ্টার কলেজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
 
পরিবার: স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি। তাদের সংসারে রয়েছে দুই কন্যা

সংসদীয় আসন: রিচমন্ড (ইয়র্কশায়ার) 

• ৪২ ব্ছর বয়সী ঋষি সুনাক ব্রিটেনের সাবেক অর্থমন্ত্রী। মাত্র দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে তিনি ব্রিটেনের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

• বিতর্কিত অর্থনৈতিক কর্মসূচির কারণে ক্ষমতায় আসার মাত্র ৬ ছয় সপ্তাহ পর বিদায় নেওয়া লিজ ট্রাসের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ঋষি। 

• ওয়েস্টমিনস্টারের অন্যতম ধনী রাজনীতিবিদ সুনাক রাজা চার্লসের আমন্ত্রণে সরকার গঠন করবেন। আর এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন ঋষি।

• গোল্ডম্যান স্যাচের সাবেক বিশ্লেষক সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হবেন।

অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান সুনাক

সুনাকে বাবা-মা পূর্ব আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তার বাবা-মা উভয়ই ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ১৯৮০ সালে ব্রিটেনের সাউদাম্পটনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সুনাকের বাবা যশবীর ও মা ঊষা। দুজনই ভারতের পাঞ্জাবের বাসিন্দা ছিলেন। পড়াশোনা আর ভালো কাজের আশায় তারা বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। যশবীর ব্রিটেনে একজন জেনারেল প্র্যাকটিশনার এবং ঊষা ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন।

ঋষি সুনাক উইনচেস্টারের প্রাইভেট স্কুল উইনচেস্টার কলেজে পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষাজীবনে গ্রীষ্মের ছুটিতে সাউদাম্পটনে ফিরে কারি হাউসে ওয়েটার হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি। পরে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়ার জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যান।

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ পড়ার সময় স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সাথে পরিচয় হয় তার। পরবর্তীতে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে। এই দম্পতির মেয়ে নারায়ণ মূর্তি একজন ভারতীয় বিলিয়নেয়ার এবং আইটি পরিষেবা জায়ান্ট কোম্পানি ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রচারণার সময় প্রায়ই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নিজ মেয়েদের কথা উল্লেখ করতেন ঋষি।

বিবিসি টেলিভিশন বিতর্কের সময় জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তিনি ছোট দুই মেয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন, যারা আমার পরিবারের এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। সুনাকের সম্পদ এবং প্রাইভেট স্কুলের পটভূমি অন্যান্য টিভি বিতর্কেও আলোচনায় এসেছিল।

২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত গোল্ডম্যান স্যাচের বিশ্লেষক ছিলেন তিনি। তাকে ব্রিটেনের সবচেয়ে ধনী সংসদ সদস্যদের একজন মনে করা হলেও নিজের সম্পদের ব্যাপারে কখনই প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি সুনাক।

২০১৫ সাল থেকে ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডের কনজারভেটিভ দলীয় এমপি তিনি। পূর্বসূরি বরিস জনসনের মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সরকারের একজন জুনিয়র মন্ত্রী হয়েছিলেন সুনাক।

ইউরোপ থেকে ব্রিটেনের বহুল আলোচিত বিচ্ছেদ ব্রেক্সিটের সমর্থক ছিলেন তিনি। ইয়র্কশায়ার পোস্টকে বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ব্রেক্সিট যুক্তরাজ্যকে ‘মুক্ত, সুন্দর এবং আরও সমৃদ্ধ’ করে তুলবে।

ব্রেক্সিট ভোটের আরেকটি মূল কারণ অভিবাসন বিধিতে পরিবর্তন আনা বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সুনাক বলেছিলেন, আমি বিশ্বাস করি উপযুক্ত অভিবাসন করা হলে তা আমাদের দেশের জন্য উপকার বয়ে আনতে পারে। কিন্তু আমাদের অবশ্যই সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

সুনাক যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণকারী এক প্রজন্মের সদস্য হলেও তার বাবা-মায়ের জন্ম ভারতে। ২০১৯ সালে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এই পরিচয় তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেছিলেন, আমার বাবা-মা এখানে অভিবাসী হিসাবে চলে এসেছেন। তাই আপনি এই প্রজন্মের মানুষ পেয়েছেন; যাদের জন্ম এখানে, কিন্তু তাদের বাবা-মা এখানে জন্মগ্রহণ করেননি। তারা একটি জীবন গড়তে এই দেশে এসেছেন।

‘সংস্কৃতি লালনের ক্ষেত্রে আমি সপ্তাহ শেষের দিকে মন্দিরে থাকতাম। কারণ আমি একজন হিন্দু। তবে আমি শনিবারও (সাউদাম্পটন ফুটবল ক্লাব) সেন্টস গেমে থাকতাম। আপনি সবকিছু করেন, আপনি উভয়ই করেতে পারেন।’

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, তিনি সৌভাগ্যবান যে, বড় হয়ে বর্ণবাদ সহ্য করতে হয়নি তাকে। কিন্তু একটি ঘটনা তার মনে আছে।

ঋষি বলেন, ‘আমি তখন আমার ছোট ভাই এবং ছোট বোনের সাথে বাইরে ছিলাম। সেই সময় নিজেকে আমার বেশ তরুণই মনে হতো। সম্ভবত আমি মাঝবয়সী কিশোর ছিলাম এবং আমরা একটি ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্টে ছিলাম। আমি তাদের দেখাশোনা করছিলাম। আমাদের কাছাকাছি কিছু লোক বসে ছিল। তারা অত্যন্ত অপ্রীতিকর কিছু শব্দ বলেছে। ‘পি’ জাতীয় শব্দ। এ ধরনের শব্দ আমি প্রথমবার শুনেছি।

‘এটি আমাকে দংশন করেছে। এখনও আমার সেই ঘটনা মনে আছে। এখনও এটি আমার স্মৃতিতে ভেসে ওঠে। আপনাকে বিভিন্নভাবে অপমান করা যেতে পারে।’

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল