শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

টানা ৩৩ ঘণ্টা বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন চালক

সোমবার, মার্চ ২০, ২০২৩
টানা ৩৩ ঘণ্টা বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন চালক

জেলা প্রতিনিধি:

টানা ৩৩ ঘণ্টার বেশি বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন চালক জাহিদ হাসান (৪৫)। মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় চালকসহ ২০ যাত্রী নিহত হন। চালক ক্লান্ত শরীরে চোখে ঘুম নিয়ে অতিরিক্ত গতিতে বাস চালানোর জন্য এতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। 

রোববার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে খাদে পড়ে যায়। এ সময় বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় নিহত ছাড়াও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। 

পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় নিহত ২০ জনের মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি কক্ষে রাখা হয়। বাকি দুজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জনের নাম-পরিচয় মিলেছে।

অন্যান্য জেলার নিহতরা হলেন- মুকসুদপুরের মো. আমজাদ আলীর ছেলে মাসুদ মিয়া (৩৫), খুলনার সোনাডাঙ্গার শেখ আহমদ মিয়ার ছেলে শেখ আব্দুল আল মামুন (৪২), নড়াইলের লোহাগাড়ার বকু শিকদারের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৬৭), ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা এলাকার শহিদ মুরাদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৮), বনগ্রাম এলাকার শামসুল শেখের ছেলে মোসতাক আহম্মেদ (৪৭), ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদু খায়ের ছেলে মহাদেব কুমার সাদু খা (৫৫), আমতলা এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে আশফাকুজ্জামান লিংকন (২৬) এবং বাগেরহাটের শান্তি রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার (৩০)। বাসচালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলী আকবরের ছেলে জাহিদ হাসান ও  চালকের সহকারী মো. মিরাজ।

গোপালগঞ্জের নিহত ৭ জন হলেন- গোপালগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনাদী রঞ্জন মজুমদার (৫০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও সদরের মাসুদ মিয়ার মেয়ে সুইটি আক্তার (২২), সদরের মাসুম মিয়ার ছেলে মোস্তাক শেখ (৪১), টুঙ্গিপাড়ার মো. কাঞ্চন শেখের ছেলে শেখ কবির হোসেন (৫৭), ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সদরের আবু হেনা মোস্তফার মেয়ে আফসানা মিমি (২৫), একই উপজেলার নওশাদ শেখের ছেলে সজীব (২৭), গোপিনাথপুরের তৈয়ব আলীর ছেলে হেদায়েত মিয়া (৫৫)। বাকিদের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

গতকাল বিকেলে চালক জাহিদের ছেলে রাতুল হাসান বাবার মরদেহ শনাক্ত করার জন্য শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তিনি বলেন, মাসে দুই দিন বাড়ি আসতেন বাবা। গাড়ি চালিয়ে তিনি সব সময় ক্লান্ত থাকতেন। গত পরশু ঢাকা, পিরোজপুর, খুলনা রুটে পাঁচটি ট্রিপে গাড়ি চালিয়েছেন। বাবা শনিবার রাতে ফোনে জানান, তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। রোববার ঢাকার থেকে এসে বাসায় এক দিন বিশ্রাম নেবেন এক কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বাবা আমাদের চিরতরে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন।’

শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি, ইমাদ পরিবহনের বাসটির চালক কোনোরকম বিশ্রাম না নিয়ে বাসটি চালাচ্ছিলেন। দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টা ধরে গাড়ি চালানোর কারণে ক্লান্ত ছিলেন। সকাল সকাল ঘুম ঘুম চোখে বাস চালানোয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি।’

আহত যাত্রী সাইফুল জানান, খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে বাসটি ছাড়ার পর হাইওয়েতে উঠেই বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালানো হচ্ছিল। আমরা যাত্রীরা কয়েক দফা বারণ করেছিলাম। কিন্তু চালক কারও কোনো কথা শোনেনি। চালকের গাফিলতির কারণে আজকে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল