শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বেঁচে থাকলে ৭১-এ পা রাখতেন হুমায়ুন ফরীদি

সোমবার, মে ২৯, ২০২৩
বেঁচে থাকলে ৭১-এ পা রাখতেন হুমায়ুন ফরীদি

বিনোদন ডেস্ক:

অভিনয়ের প্রতিষ্ঠান বলা হতো প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে। সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে ফিট করে নেওয়ার অসামান্য দক্ষতা ছিল তার। ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে (২৯ মে) পৃথিবী আলোয় প্রথম নিঃশ্বাস নেন তিনি। বেঁচে থাকলে বয়স ৭১-এ পা রাখতেন এই অভিনেতা।

রাজধানীর অদূরে গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম, মায়ের নাম বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফরীদি ছিলেন দ্বিতীয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় অভিনয়ের দিকে ঝুঁকে যান। আশির দশকের দিকে তার চলচ্চিত্রে আগমন। তবে তার আগে মঞ্চ ও টেলিভিশনে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের আসন পাকাপোক্ত করেন তিনি। অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রে। পর্দায় তার উপস্থিতি মানে দর্শকদের বুঁদ হয়ে থাকার ক্ষণ শুরু।

অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির আরও একটি বড় পরিচয়, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ফরীদি ১৯৭০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেন চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সশরীরে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীনের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ফের শিক্ষাজীবন শুরু করেন।

হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় প্রতিভার বিকাশ ঘটে এই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েই। নাট্যগুরু সেলিম আল দীনের কাছে নাট্যতত্ত্বে দীক্ষা নেন। যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে। সহজাত অভিনয়গুণে আদায় করে নেন দর্শকের ভালোবাসা। আশি ও নব্বইয়ের দশকে যে কজন অভিনয়শিল্পী মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র- এই তিন মাধ্যমেই তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন, তাদের মধ্যে হুমায়ুন ফরীদি অন্যতম।

এই গুণী অভিনেতা কাটিয়েছেন দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবন। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘নীল নকশার সন্ধ্যায়’ ও ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’ নাটকে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দেন। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’ আজও দর্শকের স্মৃতির পাতায় ভাস্বর। সেখানে ‘কানকাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান তিনি।

বহুমাত্রিক এই অভিনেতা ১৯৮৪ সালে অভিনয় শুরু করেন চলচ্চিত্রে। এখানেও সাফল্যের দেখা পান। খুব কম সময়ে দখল করেন শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতার স্থান। বাংলা চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে তিনি যোগ করেন নতুন মাত্রা। ২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ ছবির জন্য পান সেরা অভিনেতা শাখায় ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘একুশে পদক’-এ ভূষিত করেন। যদিও সেই সম্মাননা তিনি নিজ হাতে নিতে পারেননি।

ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন ফরীদি দুটি বিয়ে করেন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম মিনু। ১৯৮০ সালে তাদের বিয়ে হয়েছিল। সেই সংসারে শারারাত ইসলাম দেবযানী নামে এক মেয়ে রয়েছে। ১৯৮৪ সালে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় ফরীদির। ওই বছরই তিনি খ্যাতিমান অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফাকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালে ভাঙে সেই সংসারও। তবে ২৪ বছর একসঙ্গে থাকলেও এ সংসারে অভিনেতার কোনো সন্তান নেই।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাকে ঢাকার মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসার পর তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। গুরুতর এই আঘাতের জেরেই মৃত্যু হয় তার।

:


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল