চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে’ উপেক্ষা করে শিক্ষক নিয়োগ ইস্যুতে শিক্ষক সমিতির হস্তক্ষেপ করাকে ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এই মানববন্ধন করেন। এসময় মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড.খায়রুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ঐতিহ্য আছে যা ৭৩ অ্যাক্ট অনুযায়ী সকল কাজ করা হয়। আপনাদের বুঝা উচিত বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে শিক্ষকের প্রয়োজন আছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষক সমিতির একাংশ নিজেদের মনগড়া সিদ্ধান্ত আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। কোন একটা বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকলে দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার পরে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হয়। প্রশাসন অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি এমন একটা মিথ্যা অপবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উপর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এমন লজ্জাজনক কাজ করতেছে যার তীব্র নিন্দা জানাই।
মানববন্ধনে আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মঈন উদ্দিন বলেন, যারা আইনের কথা বলেন তারাই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে থাকেন। আইনের শানের কথা যদি তারা বলেন এটা হাস্যকর। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবিষ্যতে কে উপাচার্য হবেন সেখানে কি ফায়দা নেয়া যায় সেটা নিয়ে তারা ব্যস্ত আছেন। যদি আপনাদের কথা থাকে সামনা সামনি আসেন তথ্য প্রমাণ রাখেন দেখি কে সঠিক।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদ পদবি চায়। তারা চেয়ারে বসতে চায় তারা গবেষণা চায় না। শিক্ষক সমিতি বঙ্গবন্ধু চত্বরের সামনে উপাচার্যের পদত্যাগ চায়। দেশে যে নৈরাজ্য চলছে আপনারা তার প্রতিবাদ করেন জনগণকে বাঁচান দেশকে বাঁচান।
তিনি আরো বলেন, আমরা সম্প্রতি যা দেখছি সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বা রাষ্ট্রের বিষয় বেশি কিছু নয় তারা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়ে যে এত অভিযোগ তা আইন এবং নিয়ম মেনে নিয়োগ হচ্ছে।
অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন বলেন,
শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকদের একাংশ নিজেদের স্বার্থে হাসিলের জন্য এমন বিরুদ্ধাচারন করে। তাদের এমন আচরণের জন্য তাদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তারা কার ইন্ধনে এমন কাজ করে তাদেরকে জবাবাদিহি করতে হবে। আমি এই অন্যায় কাজের তীব্র নিন্দা করছি।
আলাওল হলের প্রভোস্ট ও আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম বলেন, শিক্ষক সমিতির যদি কোন কর্মসূচি থাকে তাহলে তারা প্রশাসন বরাবর উত্থাপন করবেন। শিক্ষক সমিতি যে ২৮ দফা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটি সাধারণ সভার কোনো শিক্ষকের অনুমতি নেননি। তারা কোনো কর্মসূচির ঘোষণা আমাদের অবহিত করেননি। তারা যা করছে একচেটিয়াভাবে করছে। তারা নিজেদের মতো করে সব করছে। শিক্ষক সমিতিতে সাধারণ সম্পাদক সবকিছু নিজের মতো করছেন। সভাপতিকে বক্তব্য দিতে দেয় না। আমরা সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকদের স্বার্থে কাজ করতে চেয়েছি। তারা বারংবার প্রশাসনের কাজকে বিভিন্নভাবে সমালোচনা করছেন।
এমআই