বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

নারী সমাজের অনুপ্রেরণা কুবি'র সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কাশমী সুলতানা

শুক্রবার, মার্চ ৮, ২০২৪
নারী সমাজের অনুপ্রেরণা কুবি'র সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কাশমী সুলতানা

শারমিন আক্তার কেয়া, কুবি প্রতিনিধি:

কাশমী সুলতানা।  কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নানা বাধা উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে গেছেন জীবনে। বাস চালক বাবা আবুল কাশেম ফকিরের বাড়িতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা কাশমী সুলতানার। বাবা আবুল কাশেম ফকির পেশায় বাসচালক হলেও মেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন।

 কাশমীর বাবা বড় পরিবারের সন্তান হওয়ায় অল্প বয়সে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নেন তিনি তাই লেখাপড়া বেশি এগোতে পারেননি। লেখাপড়া না থাকায় ড্রাইভিং কোর্স করার পর চালকের কাজে যোগ দেন। ক্যাডেট কলেজের বাস চালাতেন। একসময়ে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান চালক হন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে অবসরে যান। তবে মেয়েকে পড়িয়েছেন তিনি। ছায়া হয়ে পাশে থেকেছেন সব সময়। 

কাশমীর জন্ম কুমিল্লা জেলার কোটবাড়ির  সালমানপুর গ্রামে। এখানেই তার বেড়ে উঠা, পড়াশোনা, নিজেকে চিনতে পারা। শিক্ষাজীবনে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ নিয়ে ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে পাশ করেছেন। তারপর তিনি ভর্তি হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগে। ২০১৭ সালে ৩.৮৬ সিজিপিএ নিয়ে তিনি বিএসসি পাশ করেন। এরপর ২০১৮ সালে   ৩.৮৮ সিজিপিএ নিয়ে এমএসসি পাশ করেন কাশমী।

পড়াশোনা, সংসার পরবর্তীতে মা হওয়া এবং শিক্ষিকা হয়ে কর্মজীবনে প্রবেশের এই কঠিন কর্মযজ্ঞে প্রাথমিকভাবে হিমশিম খেলেও ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নিয়েছেন কাশমী সুলতানা। 

জীবনের এই অর্জনে সম্পর্কে কথপোকথনে কাশমী সুলতানা বলেন, 'বাবা বাসচালক এটা তাদের জীবনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। বাবা সার্টিফিকেটধারী না হলেও জীবনকে খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। বাবা তাদের পথপ্রদর্শক। ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবার কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোন সরকারি মেডিকেল কলেজে চান্স পেতে ব্যর্থ হই । পরবর্তীতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগে ভর্তি হই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরই মূলত আমার শিক্ষকতা পেশার প্রতি আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। আর স্রষ্টার দয়ায় আজ ইচ্ছেও পূরণ হলো।'

স্বপ্নজয়ের এই গল্পে কোন চ্যালেন্জ মোকাবিলা করতে হয়েছিলো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, " যেহেতু আমার বাবা-মা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ সচেতন ছিলেন তাই সত্যিকার অর্থে পড়াশোনা করা কালীন সময়ে তেমন কোন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু কর্মজীবন ও সংসার জীবন মোটামুটি একসাথেই শুরু করার দরুন সংসারের পাশাপাশি কর্মজীবনে নিজেকে এগিয়ে নেওয়াটাকেই সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে। বিশেষ করে মা হবার পর ক্যারিয়ারের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়াটাই কঠিন মনে হয়েছিল। তবে এখন সামলে নিয়েছি।

 তার এই পথচলায় অনুপ্রেরণার বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, শুরুতে বাবা মা এবং পরবর্তীতে বাবা মার পাশাপাশি স্বামীর অনুপ্রেরণাই সামনে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে আমাকে। 

আমার আজকের অবস্থান আমার পাশাপাশি আমার বাবা-মায়েরও প্রত্যাশা ছিল। বাবা মার চোখে যখন প্রত্যাশা পূরণের তৃপ্তি দেখতে পাই তখন আসলে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। "
এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল