শিশির আসাদ: আগামী ২০ আগষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিট ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতকের ভর্তি পরীক্ষা। সুতরাং হাতে সময় আছে অল্প। এই অল্প সময়ে কিভাবে প্রস্তুতি নিলে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব এ নিয়েই আমার লেখা-
প্রথমেই বলে রাখি ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবারের মত এবারও ৪টা বিষয়ের উপর ১২০ নাম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নিবে।
পরীক্ষার মানবন্টন- পদার্থ-৩৫, রসায়ন-৩৫, গনিত-৩৫, ইংরেজি-১৫
১২০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য সময় পাবে ৯০ মিনিট। পাশ মার্কস -৪৮।
যেহেতু ঢাবি প্রযুক্তি ইউনিটের কোনো প্রশ্ন ব্যাংক বাজারে পাওয়া যায় না তাই প্রশ্ন প্যাটার্ন নিয়ে প্রতি বছর পরীক্ষার্থীদের হাজারো প্রশ্ন থাকে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি প্রশ্ন তুলনামূলক অনেক সহজ হয়। অনেক জটিল ম্যাথ কিংবা প্যাচ মারা ইকোয়েশন অথবা মাথা ঘুরানো রিয়াকশন খুব একটা থাকে না। বেসিক ক্লিয়ার থাকলে খুব সহজেই এগুলো উত্তর করা যায়। একে একে সবগুলো বিষয় নিয়ে কিভাবে প্রিপারেশন নিতে হবে সেটা বিস্তারিত ভাবে লিখছি-
গণিত(৩৫ নম্বর)
ভর্তি পরীক্ষায় গণিত থেকে সর্বমোট ৩৫ মার্কসের এমসিকিউ থাকে। তাই অন্যান্য যেকোনো বিষয় থেকে গণিতের গুরুত্ব অনেক বেশি। উচ্চমাধ্যমিকে বইয়ের যে অংকগুলো বারবার বোর্ডে বিভিন্ন বছর এসেছে সেই অংকগুলো ভর্তি পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এবার আসা যাক কিছু অধ্যায় যেখান থেকে সবসময় প্রশ্ন থাকে।
যেমন-যোগজীকরণ, অন্তরীকরণ, ভেক্টর, বিন্যাস ও সমাবেশ, সরল রেখা, বৃত্ত, কোনিক, দ্বিপদী উপপাদ্য, ত্রিকোণমিতি, স্থিতিবিদ্যা ও গতিবিদ্যা।
এখন যে সময় আছে বইয়ের সব ম্যাথ করে শেষ করা যাবে না। তাই আমার সাজেশন হচ্ছে বইয়ের যে ম্যাথগুলো গুরুত্বপূর্ণ মানে বিভিন্ন বোর্ডে বার বর এসেছে সেগুলো বুঝে বুঝে করে ফেলা।
প্রশ্ন প্যাটার্ন সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বোঝার জন্য বিগত বছরের একটা ম্যাথ নিচে দিয়ে দেয়া হলোঃ “Examination” শব্দ থেকে ৪টি বর্ন নিয়ে বিন্যাস ও সমাবেশ করো।
পদার্থ(৩৫ নম্বর)
গণিতের পরেই যে বিষয়টার গুরুত্ব সব চেয়ে বেশী সেটা হল পদার্থ বিজ্ঞান। এডমিশন টেস্টে মোট ৩৫ মার্কসের প্রশ্ন থাকে এই বিষয় থেকে। এই ক্ষেত্রেও বইয়ের অনুশীলনের ম্যাথগুলো সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পদার্থ বিজ্ঞানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো হচ্ছে: ভেক্টর, গতিবিদ্যা, নিউটনিয় বলবিদ্যা, কাজ ক্ষমতা শক্তি, তরঙ্গ, সরল ছন্দিত স্পন্দন, চল তড়িৎ, স্থির তড়িৎ, জ্যামিতিক আলোকবিজ্ঞান, ভৌত আলোক বিজ্ঞান।
প্রশ্ন প্যাটার্ন সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বোঝার জন্য বিগত বছরের একটা ম্যাথ নিচে দিয়ে দেয়া হলো: প্রিজম কোণ ৬০ ডিগ্রি আর নূন্যতম কোণ ৩০ ডিগ্রি হলে, প্রিজমের উপাদানের প্রতিসরনাঙ্ক কত?
রসায়ন( ৩৫ মার্কস)
রসায়ন থেকে মোট ৩৫ মার্কসের প্রশ্ন থাকে। রসায়নের জন্য বিভিন্ন অধ্যায়ের গাণিতিক সমস্যা গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া এবং যৌগের নাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ছাড়াও সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ, রাসায়নিক প্রক্রিয়া ও পরীক্ষায় আসে। সুতরাং বইয়ে যত ধরনের গাণিতিক সমস্যা আছে সবগুলো করে ফেলা আর গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়াগুলো একটা খাতায় নোট করে ফেলতে হবে।
অনেকেই জিজ্ঞেস করো জৈব রসায়ন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আসলে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সম্পূর্ণ অধ্যায় এখন শেষ করার সময় নেই। এখান থেকে নামীয় বিক্রিয়াগুলো আর যৌগের নামগুলো পড়ে যায়।
প্রশ্ন প্যাটার্ন সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বোঝার জন্য বিগত বছরের একটা ম্যাথ নিচে দিয়ে দেয়া হলো: ২৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৫ গ্রাম অক্সিজেন গ্যাসের অনুসমূহের গতিশক্তি নির্ণয় কর।
ইংরেজি(১৫ নম্বর)
মোট ১০ মার্কসের প্রশ্ন থাকে ইংরেজি থেকে, সাধারনত ব্যাসিক গ্রামাটিকাল প্রবলেম দেয়া হয় পরীক্ষায়। বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ, ভার্ভ এর রাইট ফর্ম ইত্যাদি গ্র্যামাটিকাল প্রবলেম থাকে। আন্টোনিম, সিনোনিম- এগুলা প্র্যাক্টিস করা যেতে পারে। আরো কিছু প্রবলেম থাকে আমার এক্সাক্টলি মনে পরছে না ।
এখন একটা কমন প্রশ্ন- কত পেলে চান্স পাবো? সত্যি বলতে আসলে কত পেলে চান্স পাবে সেটা বলা কঠিন।
আশা করি একটু হলেও কনফিউশন দূর করতে পেরেছি। এখনো যে সময় আছে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে চান্স পাওয়া অসম্ভব না। সবার জন্য শুভ কামনা।
[বিঃদ্রঃ উপরে যে অধ্যায়গুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়েছে তার বাইরে অন্য অধ্যায়গুলো থেকেও প্রশ্ন থাকে। তাই আমার সাজেশন আগে ওই অধ্যায়গুলো শেষ করে তারপর অন্য অধ্যায়গুলো পড়ে ফেলা এবং এর সাথে যদি পারো বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট আর রুয়েটের প্রশ্ন ব্যাংক একটু উল্টে-পাল্টে দেখা যেতে পারে]
সময় জার্নাল/এমআই