নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদীয়া জেলায় বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। ওই যুবক চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দাবি বিএসএফের।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৩২তম ব্যাটালিয়ন হালদারপাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) দিনগত রাতে সোনা পাচারের চেষ্টাকালে এ ঘটনা ঘটে।
বিএসএফের দাবি, বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা অবৈধ চোরাচালানের সময় দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জওয়ানদের ওপর আক্রমণ চালায়। জওয়ানরা নিজেদের অবস্থান ধরে রেখে চোরাকারবারিদের আক্রমনের মুখোমুখি হন। উত্তেজনাপূর্ণ ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েও জওয়ানরা সংযম প্রদর্শন করেন।
তবে চোরাকারবারিদের আগ্ৰাসনে বাধ্য হয়ে তারা আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালায় এবং সফলভাবে চোরাচালানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। এ আত্মরক্ষমূলক পদক্ষেপে একজন বাংলাদেশি চোরাকারবারি গুলিবিদ্ধ হন। বাকি চোরাকারবারিরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ঘটনাস্থল থেকে একটি কাটার এবং চারটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
বিএসএফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওইদিন রাত আনুমানিক ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ ৪-৫ জন সশস্ত্র পাচারকারীকে বাংলাদেশের দিক থেকে নদী পার হয়ে ভারতীয় অঞ্চলে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাদের থামতে বলেন। তারা সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে অগ্রসর হতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে একটি পিএজি থেকে এক রাউন্ড গুলি বাতাসে ছোড়া হয়।
এতে পাচারকারীরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং বিপজ্জনকভাবে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছাকাছি চলে আসে। তারা বিএসএফের এক জওয়ানকে ঘিরে ফেলে এবং তার ওপর আক্রমণ চালায়।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরে অন্য একজন জওয়ান তার সহকর্মীকে রক্ষার জন্য তার ইনসাস রাইফেল থেকে এক রাউন্ড গুলি চালায়। এসময় একজন পাচারকারীর তলপেটে গুলি লাগে এবং সে ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। এরপরই পাচারকারীরা বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যান।
গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশি পাচারকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলায় আহত বিএসএফ জওয়ানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি কাটার এবং চারটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আইনি ব্যবস্থা নিতে নিহত বাংলাদেশি পাচারকারীর মরদেহ এবং উদ্ধারকৃত জিনিসপত্র কৃষ্ণগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
একে