অনলাইন ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেয়। বিচারক শফিউল আলম মাহমুদ ও মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য।
এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পরিকল্পিত হত্যা, হত্যা চেষ্টার মাধ্যমে গণহত্যা, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, নেতৃত্বদান, অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অংশগ্রহণ। এসব অভিযোগের মধ্যে "সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি" বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও রয়েছে।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল বিচার শুরুর আদেশ দেন এবং একই সঙ্গে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করেন। এর মাধ্যমে এই প্রথমবারের মতো আলোচিত জুলাই অভ্যুত্থান-সম্পর্কিত কোনো মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হলো।
আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে পলাতক থাকায় তাঁদের অনুপস্থিতিতে বিচার চলছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও তাঁরা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁদের ‘পলাতক’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে হাজির চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এদিন নিজেকে দোষী স্বীকার করেন এবং জানান তিনি মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে চান।
ট্রাইব্যুনাল তাঁকে এই মামলার সাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেয় এবং তাঁর নিরাপত্তার স্বার্থে পৃথক সেলে রাখার নির্দেশ দেয়। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ জানান, যদি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত সন্তুষ্ট হন যে তিনি প্রকৃত সত্য উদঘাটনে সহায়তা করেছেন, তবে তাঁকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
আগামী ৩ আগস্ট থেকে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। পরদিন থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচারিক ধাপ শুরু হবে।
প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারিক যাত্রা শুরু হলো। পলাতক দুই আসামিকে আদালতে হাজির করার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা চলমান। বিশেষ করে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।”
একে