ধর্ম ডেস্ক:
বর্তমান পৃথিবীতে লোভ, প্রতিযোগিতা ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি মানুষকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে এসেছে যে, এখন উপার্জনের উৎস যাচাই করা তাদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছে- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আখেরী নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা অনেক আগেই সাবধান বাণী হিসেবে বলে গিয়েছিলেন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لاَ يُبَالِي الْمَرْءُ بِمَا أَخَذَ الْمَالَ أَمِنْ حَلاَلٍ أَمْ مِنْ حَرَامٍ
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের ওপর এমন এক যুগ অবশ্যই আসবে যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে কিভাবে সে মাল অর্জন করল হালাল উপায়ে না হারাম উপায়ে।
-(বুখারি, হাদিস ২০৮৩)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা:
এই হাদিসের বাণী আজকের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় ভয়ংকরভাবে সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। কারণ সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ও ঋণ ব্যবসায় অধিকাংশ মানুষ লেনদেনে সুদের উপাদান আছে কিনা তা খেয়াল করে না।
আবার ঘুষ ও অনৈতিক আয়ও ব্যাপকতা লাভ করেছে। চাকরি বা ব্যবসায় সফলতার জন্য ঘুষ দেওয়া বা নেওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। হালাল বিকল্প থাকলেও মানুষ তা বেছে নেয় না, কারণ হারাম পথে দ্রুত লাভবান হওয়া যাচ্ছে।
তেমনিভাবে বাজারের পণ্যে ভেজাল, মাপজোকের কারচুপি এবং মিথ্যা বিজ্ঞাপন এখন সাধারণ ব্যাপার।
অনেক যুবক ‘বেটিং’ বা অনলাইন গেম্বলিং থেকে উপার্জনকে আয় হিসেবে ধরে নিচ্ছে, হারামের ব্যাপারে পরোয়া করছে না।
শরীয়তের দৃষ্টিতে সতর্কবার্তা
হারাম উপার্জনের ক্ষতি শুধু দুনিয়াতে নয়, আখিরাতেও ভয়াবহ। হারাম সম্পদ থেকে খাবার খেলে দোয়া কবুল হয় না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بالحرَامِ
“যে দেহ হারাম খাদ্য দিয়ে প্রতিপালিত হয়েছে, সে দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(শু‘আবুল ঈমান, হাদিস: ৫৭৫৯)
সুতরাং আমাদের করণীয় হচ্ছে- তাকওয়া বৃদ্ধি করা তথা উপার্জনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর ভয় রাখা। কোন আয় হালাল আর কোনটি হারাম তা শেখা।আয়ের উৎস সন্দেহজনক হলে তা এড়িয়ে চলা।সন্তান ও স্বজনদের মধ্যে হালাল-হারামের বোধ জাগানো।
আল্লাহ আমাদের হালাল রিজিক গ্রহণের তাওফিক দান করুন।
এমআি