রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

ইসির শুনানিতে বিএনপির দুই পক্ষের ‘মারামারি’

রোববার, আগস্ট ২৪, ২০২৫
ইসির শুনানিতে বিএনপির দুই পক্ষের ‘মারামারি’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদীয় আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তির শুনানিতে নির্বাচন কমিশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের পক্ষে-বিপক্ষে বিএনপির দুই গ্রুপে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

প্রথম দিনের শুনানিতে রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এর আগে এনসিপির সঙ্গেও একই জায়গায় বিএনপির হাতাহাতি হয়। বিএনপির এ অংশকে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার অনুসারী বলে দাবি করেছে এনসিপি। রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে চান।

সিইসির সামনেই মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় নির্বাচন কর্মকর্তারা দুই পক্ষকেই থামানোর চেষ্টা করেন। শুনানিকালে সাংবাদিকদের অডিটোরিয়ামে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

মারামারির পর ইসিতে উপস্থিত থাকা বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৫ বছর যে বিএনপির জন্য লড়াই করলাম, তারাই এখন আমাকে ধাক্কা দেয়। ঠিক আছে, ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি আছেন তিনি পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষের স্বীকারোক্তি নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে আমরা প্রেজেন্ট (উপস্থাপন) করেছি। জনসংখ্যা বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত। আমার বিষয়গুলো আমি নিজে প্রেজেন্ট করবো, তাই করেছি। আশা করেছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি আছেন তিনি গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ইসিতে ঢুকবেন না। কিন্তু তারা গুন্ডা নিয়ে ইসিতে এসেছেন। এই আসনের প্রার্থী তার গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ইসিতে এসে মারামারি করেছেন- এটা খুবই লজ্জাজনক। এতে কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এনসিপি কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, উনি যেহেতু পরিচিত মুখ নন, সুতরাং উনি জামায়াত না এনসিপি আমার জানা নেই। তবে ওনার লোকজন প্রথমে আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। আমার লোকজন তো বসে থাকবে না, কারণ আমি একজন নারী। আমার লোকজনকে মারধর করেছে, তখন আমার লোকজন জবাব দিয়েছে।

এসময় এনসিপির তিনজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে দলটি। তারা হলেন- এনসিপি নেতা প্রকৌশলী আমিনুল হক চৌধুরী, মুস্তফা সুমন ও আতাউল্লাহ।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: এ আসনটি ২০২৪ সালে ছিল সরাইল ও আশুগঞ্জ নিয়ে। এবার করা হয়েছে সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা এবং বিজয়নগর উপজেলার বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর ইউনিয়ন নিয়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩: এ আসনটি ২০২৪ সালে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর মিলে। এবার করা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর এবং বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুর, চম্পানগর, পত্তন, দক্ষিণ সিংগারবিল, বিষ্ণপুর, চর ইসলামপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন নিয়ে।

ইসিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের খসড়া প্রকাশের পর পক্ষে বিপক্ষে আবেদন জমা পড়ে।

রোববার দুপুরে শুনানির একপর্যায়ে দুপক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং মারামারি শুরু করে। তারপর ইসি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ইসি সচিব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের জন্য শুনানি শেষ করেন এবং তাদের শুনানি কক্ষ ত্যাগ করার অনুরোধ জানান।

শুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপির রুমিন ফারহানা ইসির প্রকাশিত খসড়ার পক্ষে তার যুক্তি তুলে ধরেন। আর অন্যান্য বেশ কয়েকজন খসড়ার বিপক্ষে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। খসড়ার বিপক্ষে থাকা শুনানিতে অংশ নেওয়া নেতারা জানান, বিজয়নগর উপজেলা থেকে তিনটি ইউনিয়ন (বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে। তারা উপজেলা অখণ্ড চায়।

‘মারামারি’ হয়েছে বিএনপির দুই পক্ষে, দাবি রুমিন ফারহানার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে চান রুমিন ফারহানা। ইসিতে তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হলো এখানে একটি মারামারি হয়েছে। আমি যেহেতু একজন আইনজীবী, আমি মনে করেছি, আমার কেস আমি নিজেই প্রেজেন্ট করবো। সো আমার কেস আমি প্রেজেন্ট করেছি।...ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এর যিনি প্রার্থী তিনি সদলবলে ২০-২৫ জন মিলে গুন্ডাপান্ডার মতো আচরণ করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক, অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি মনে করি কমিশনের যে গাম্ভীর্য এবং যে সম্মান সেটার সঙ্গে এটা যায়না।

বাইরেও হট্টগোল
এ সময় নির্বাচন ভবনের বাইরেও হট্টগোল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বিক্ষোভকারী একটি দলকে গেটের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। নির্বাচন ভবনের সামনে জলকামানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রোববার শুনানির শুরুতে সিইসি স্বাগত বক্তব্য রাখার পর সাংবাদিকদের আর সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ২৭ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি চলবে।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল