নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ইমাম মাহদি দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরু পাগলার মাজারে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুরের সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের হলে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—গোয়ালন্দ উপজেলার ১নং বেপারীপাড়া গ্রামের মো. আইয়ুব আলী গাজীর ছেলে মো. আলমগীর গাজী (৪৫), নজর উদ্দিন সরদার পাড়া এলাকার ইসাক সরদারের ছেলে মো. সোহান সরদার (৩৩), ২নং ওয়ার্ড দেওয়ান পাড়া এলাকার নেকবার আলী শেখের ছেলে রিয়াজ হোসেন রিতান্ত (২১), গোয়ালন্দের নতুন পাড়া (মাল্লাপট্টি) এলাকার মো. শওকত সরদারের ছেলে মো. জীবন সরদার (২২), পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড জুড়ান মোল্লা পাড়া গ্রামের আ. মালেক ফকিরের ছেলে সাগর ফকির (২১), মাল্লাপট্টী শাকের ফকির পাড়া এলাকার হেলাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম শুভ (১৭), ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানার ডিগ্রীরচর বারখাদা গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন সরদারের ছেলে মোহাম্মদ ফেরদৌস সরদার (৩৬) ও গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের ছালামের ছেলে বিল্লু।
এর আগে, এই মামলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেওয়ান পাড়া গ্রামের আফজাল সরদারের ছেলে মো. শাফিন সরদার (১৮), উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ১নং দিরাস্তুল্লাহ মৃধা পাড়ার মৃত আক্কাস মৃধার ছেলে উজানচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. মাসুদ মৃধা, উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লাল মিয়া মৃধার ছেলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিরু মৃধা, দেওয়ান পাড়া গ্রামের মো. জহির উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক জনি (৩২), গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়া গ্রামের কাজি আরিফের ছেলে কাজী অপু (২৫), গোয়ালন্দ উপজেলার দিরাজতূল্লাহ মৃধা ডাঙ্গী গ্রামের মৃত মকলেছুর রহমান মৃধার ছেলে মো. হায়াত আলী মৃধাকে (২৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, পুলিশের ওপর হামল ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাত ৩৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোববার রাতে চারজন ও সোমবার তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে, এই মামলার আরও সাতজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত এই মামলায় মোট ১৪ জন আসামি গ্রেপ্তার রয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনকে রোববার ও পাঁচজনকে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। ১১ জনের মধ্যে কাজী অপু ও বিল্লু ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকি তিনজন আসামি মঙ্গলবান আদালতে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরাল পাগলার দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় নুরাল পাগলার ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।
একে