সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মুখোমুখি অধ্যাপক পারভেজ: 'রাষ্ট্র মেরামতের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য বিশাল'

সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫
মুখোমুখি অধ্যাপক পারভেজ: 'রাষ্ট্র মেরামতের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য বিশাল'

সময় জার্নাল প্রতিবেদক:

ডা. ইউনুস নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছরে অর্জন, সাফল্য-ব্যর্থতা, নির্বাচন, পিআর পদ্ধতিতে বিএনপির সুবিধা, ডাকসু, জাকসু, রাকসু, চাকসু নির্বাচন ও দেশের ব্যাংকিং খাত, অর্থনীতির বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন ভূ-রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ও এনবিইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।

আজকে প্রথম পর্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পার হলো; বর্তমান দেশের অর্থনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতি এবং সরকারের অর্জন, সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে অথ্যাপক পারভেজের পর্যালোচনা তুলে ধরা হলো।

এ বিষয়ে অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, নিজের মতো করে দেখার মানুষ তো আমি নই। আমি যা দেখব, আপনি তা স্বীকার করবেন। একটা সরকার এসে একটা দুমড়ানো-মোচড়ানো একটা অর্থনীতি তারা পেয়েছে। ব্যাংক খাত ধ্বসে গেছে অনেক কিছু। এইখানে ডক্টর ইউনূস প্রথম যেটা প্রায়োরিটি ঠিক করেছে সেটা হচ্ছে রাষ্ট্র কাঠামোকে ঠিক করা। 

শুধু আমি একটি সরকারকে দোষ দিচ্ছি না।  গত বিশ বছর, চল্লিশ বছর, সত্তর বছর, আমরা, আমাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছি, আমাদের পুলিশ ধ্বংস হয়েছে, আমাদের ট্যাক্স ধ্বংস হয়েছে, কাস্টমস ধ্বংস হয়েছে, ব্যুরোক্রেসি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের নির্বাচন সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলোতে ডক্টর ইউনূস প্রথম হাত দিয়েছেন। ওনার টপ প্রায়োরিটি ওয়াইজ স্ট্রাকচার। ন্যাশনাল স্ট্রাকচার এগুলো নিয়ে তর্ক বিতর্ক হচ্ছে। শর্ট টাইম যে এক বছরে পুলিশ বাহিনীকে গঠন করা, এক বছরে আপনার ইনকাম ট্যাক্স ট্যাক্স কে নতুন করে সাজানো। আমি আর দ্বিরুক্তি করতে চাচ্ছি না। 

আমি বলতে চাচ্ছি যে সমস্ত জিনিস গুলোকে তিনি হাত দিয়েছেন। যেমন, মানবাধিকার বিষয়টি উনি করতে পেরেছেন। সংস্কারের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। হাফ দ্য ওয়ে। আর কিছু কিছু জিনিস অর্ধেক পথের সামনে এগিয়ে গেছে। কিছু কিছু ব্যাপারে জাতীয় ঐক্য এখনো হয়নি। 

দেশের দরিদ্র মানুষ ও বেকারত্বের বিষয়ে অধ্যাপক পারভেজ বলেন, আমরা খুবই পজেটিভ। আমরা যারা অর্থনীতির ছাত্র, আমরা যারা এলিট ক্লাসে থাকি। এখন যদি আপনি পয়সার আর একটা দিক দেখেন। এই গত বারো মাসে আমাদের যে অর্থনীতি, ব্যাংক, দুর্নীতিগ্রস্থ সমাজ ব্যবস্থা, আমলাতান্ত্রিকতা এগুলোর পায়ের নিচে পড়ে নিষ্পেষিত হচ্ছে বাংলার মানুষ, মেহনতি মানুষ। তাই আমি যেটা বলতে চাচ্ছি যে, যাদেরকে আমরা গরীব বলব অর্থাৎ একটা বিশেষ ক্যালোরির খাদ্য যারা পায় না, যারা রেডিসনের সামনে থেকে খাদ্য জোগাড় করে অথবা সত্তর আশি বছর বয়সে কাঁধে করে মাল টানে। মেয়েরা ইট ভাঙে, বাচ্চারাও ইট ভাঙছে। এইভাবে একজন পরিবারে কামাই করার পরে পাঁচ জনের জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সেই ক্যালোরী তারা পায় না। সেই অর্থে আমরা এদেরকে অতিদরিদ্র বলতে পারি। গভমেন্ট, যেটা হয়তো প্রাইমারিতে এটা পিছনে গেছে অথবা সময়ে পায়নি। অথবা তাদের সেই যে একেবারে ওয়ার্কিং ক্লাস আপনার বাসার গার্ড ,আপনার বুয়া, হ্কাররা কিন্তু তারাও আপনার একেবারে প্রান্তিক। এরা বড় কষ্টে আছে কারণ আপনার জীবনযাত্রার মান বেড়ে গেছে। ওদের আয় বাড়েনি, বেকারত্ব হয়েছে। গত এক বছরে বিশ তিরিশ লাখ লোক বেকার হয়েছে। 

ব্যাবসা বানিজ্য নিয়ে তিনি বলেন, আপনি দেখেন আমাদের এক্সপোর্ট কিন্তু ভালো। আমাদের এখন আমাদের ইমপোর্ট এর ক্ষেত্রে দেখেন হঠাৎ ইমপোর্ট কমে গেছে। প্রথম কথা হচ্ছে ম্যাটেরিয়ালস আসছে না, তারপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইমপোর্ট আসতেছে না। তাহলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারিজ আর রেমিটেন্স আসতেছে না। মানে ডোমেস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, দোকানদারের কাছে গেলেই বলবে যে বেচাকেনা কম, যেটাকে আমরা বলছি কনজাম্পশন কমেছে বা পাওয়ার কমার কারণে এবং ইকনমিক সুইং করেছে। 

অধ্যাপক পারভেজ বলেন, এক বছরে প্রফেসর ইউনুসকে আমি  একটি পরীক্ষার মুখে দাঁড় করাতে চাই না এবং ওনার হাতে যদি ইলেকশন হয় তাহলে যে সময়টুকু আছে এতে উনি রাষ্ট্রটা মেরামত করা, রাষ্ট্রের কাঠামো মেরামত করার কাজটা হয়তো করতে পারবে। 

এক বছরে ডা. ইউনুস সরকারের সাফল্যের ব্যাপারে অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, রাষ্ট্র মেরামতের ক্ষেত্রে সাফল্য বিশাল। এগুলো আমরা কল্পনাও করতে পারতাম না। মানবাধিকার, ডক্টর ইউনূস গুমের বিরুদ্ধে আইন পাশ করে ফেলছে। আপনি তো জানেন ইলেকশন কমিশন নতুনভাবে ঠিক করা হচ্ছে। যদিও এখন যারা ইলেকশন কমিশনার আছে, এরা যেহেতু প্রথম দিকে বসে গেছে সংস্কারের, তাই এদের ব্যাপারে আমি কথা বলছি না। সেরকম পদক্ষেপও একটা সংস্কার করা হবে আমাদের সংস্কারের ক্ষেত্রে। কিন্তু এটা নিয়ে মানুষ খুশি হয় না কেন জানেন? সংস্কার তো করেননি স্যার। অর্থাৎ বাংলাদেশের ৩৫% পার্সেন্ট লোক এগ্রিকালচারের নিয়োজিত, ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়োজিত। তাদের সংস্কার হয় নাই।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল