আহসান শামীম, চবি প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আলোচিত হাটহাজারীর যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাটহাজারী এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ।
এএসপি তারেক আজিজ জানান, চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা নিয়ে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় হানিফের নাম রয়েছে। “উক্ত মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও মামলা আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ফতেপুর ইউনিয়নে ‘মাফিয়া’ চক্রের মতো প্রভাব বজায় রেখেছিলেন হানিফ। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার অন্যতম সহযোগী ছিলেন ছোট ভাই ইকবাল—যিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে হানিফ–ইকবাল চক্র এলাকায় মাদক কারবার, গাছ চুরি ও বিক্রি, চাঁদাবাজি, অবৈধ দখল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের ওপর হামলার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। হাটহাজারীসহ বিভিন্ন থানায় ১০টির বেশি মামলা থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রভাব ও “ম্যানেজমেন্টের” কারণে তারা এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা
২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশন সংলগ্ন দোকান দখল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় হানিফের অনুসারীরা। এ ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৭০ শিক্ষার্থী—যা শুরু হয় এক ছাত্রীকে মারধরের জেরে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনায় পৃথক মামলা করে এবং মামলাগুলোতে হানিফকে আসামি করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, চবি রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের জায়গায় থাকা অধিকাংশ দোকানের নিয়ন্ত্রণ ছিল হানিফের হাতে। এসব দোকান চালাতে নিয়মিত চাঁদা দিতে হতো। ফতেপুর ইউনিয়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার আশপাশে নতুন কোনো ব্যবসা বা দোকান চালু করতে গেলেও নিতে হতো তার “অনুমতি”—অস্বীকৃতি জানালে হামলা বা ভাঙচুর ছিল নিয়মিত ঘটনা।
সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসাসংক্রান্ত একাধিক মামলার পাশাপাশি চবি শিক্ষার্থী হৃদয় তরুয়া হত্যা মামলাতেও ইকবালের নাম রয়েছে।
এমআই